লক্ষ্মীপুরে ৬ মাসে ৩৭ লাশ উদ্ধার
জাহাঙ্গীর হোসেন লিটন, লক্ষ্মীপুর : লক্ষ্মীপুর জেলায় চলতি বছরের ৬ মাসে নারী ও শিশু, রাজনৈতিক কর্মী, শ্রমিক, মাদক ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের ৩৭টি লাশ উদ্ধার হয়েছে।
তিনটি ডাবল মাডারসহ লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় ১৭টি, রায়পুর উপজেলায় ৮টি, কমলনগর উপজেলায় ৭টি এবং রামগঞ্জ উপজেলা ৫টিসহ মোট ৩৭টি লাশ উদ্ধার হয়েছে।
উদ্ধার হওয়া লাশের মধ্যে ১১ নারী, ৩ শিশু রয়েছে। ৬ লাশের পরিচয় পাওয়া যায়নি। ২ জন পুলিশের সাথে ক্রস ফায়ারে নিহত হয়। আধিপত্ত্য বিস্তার, মাদকব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, জমিসংক্রান্ত বিরোধ, যৌতুক আদায়, ক্রস ফায়ারসহ নানা কারণে এসব হত্যাকা- সংঘটিত হয়।
জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এসব লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটলেও এসব হত্যার কারণ উৎঘাটন হয়নি এখনো। হত্যাকা-ের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে সচেতন মহল মনে করেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব ঘটনায় প্রকৃত আসামিদের গ্রেফতার ও মামলার অদন্তে অগ্রগতি না থাকায় জেলার মানুষ শংকিত ও উদ্বিগ্ন। সর্বত্র বিরাজ করছে আতংক, সৃষ্টি হয়েছে নিরাপত্তাহীনতা।
লক্ষ¥ীপুর সদর : ২৬ জুন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দালাল বাজার ইউনিয়নের মহাদেবপুর এলাকায় ১০ মাসের শিশু কন্যা রাইসার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় শিশুটির মা ইয়াছমিন আক্তারকে আটক করে স্থানীয়রা পুলিশের হাতে তুলে দেয় পরিবারের লোকজন।
১২ জুন রোববার বিকেলে সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নের নলডগী গ্রামের একটি খাল থেকে অজ্ঞাত এক নারী (৩০) ও শিশুর (১০) গলা কাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অজ্ঞাত পরিচয় নারী ও ছেলে শিশুর মরদেহ খালের পানিতে ভাসতে দেখে এলাকার লোকজন পুলিশে খবর দেয়। ১০ জুন সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের রমারখিলের বাড়ি থেকে লাবনী আক্তার (১৫) নামে এক মাদ্রাসার ছাত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। লাবনী স্থানীয় রমারখিল ইসলামীয়া জাব্বারিয়া দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্রী ও রমারখিল গ্রামের প্রবাসী দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে।
২৫ মে বুধবার সকাল ১১টায় সদর উপজেলার বশিকপুর গ্রামের বেদ্দের বাড়ির মোড়ে মো. ইসমাইল হোসেন চৌধুরী ও তার ভাই ইব্রাহীম হোসেন রতনকে গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।
১০ মে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়নে পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে ইউছুফ নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
সন্ত্রাস দমনে পুলিশের ভূমিকা প্রশংসনীয় হলেও জলার সর্বত্র অপরাধ কমছে না। ভুক্তভোগী কয়েকটি পরিবার প্রত্যাশা করছেন লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার এসব অপরাধ দমনে বিশেষ ভূমিকা রাখবেন, বিশেষ করে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে জোরালো অভিযান পরিচালনা করবেন। অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার হলে অপরাধ কমবে, অনেক হত্যা বন্ধ হবে। পাশাপশি যে কোন ধরনের হত্যাকা-ই সংঘটিত হোক না কেন প্রতিটি হত্যায় হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় এতে দৃষ্টান্তমূলক স্বস্তির ব্যবস্থা না করলে হত্যাকা- বৃদ্ধি পাবে বলে সচেতন মহল মনে করেন।