ছিনতাই ঠেকাতে ধানমন্ডির পথে পথে ব্যারিকেড
রিকু আমির : ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ ঠেকাতে ধানম-ি আবাসিক এলাকার বেশিরভাগ রাস্তায় বসানো হয়েছে ব্যারিকেড। যেগুলোয় লেখা, রাত ১১টার পর রাস্তা বন্ধ থাকবে। যদিও এ নিয়ম এখনও কার্যকর করা হয়নি বলে জানিয়েছেন ধানম-ি থানার ওসি নূরে আজম মিয়া।
সরেজমিনে জানা গেছে, ধানম-ি থানা এবং ধানম-ি বাড়ি মালিক সমিতির যৌথ সিদ্ধান্তে এখানকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তা দিতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। খুব শিগগিরই একটি সভা করে এসব কার্যকর করা হবে। ধানমন্ডির ৪ নম্বর, ৬ নম্বর, ৮ নম্বরসহ পুরো এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বার্জার পেইন্টসের সহযোগিতায় (স্পন্সর) রাস্তার প্রবেশ পথগুলোতে একটি করে ব্যারিকেড রয়েছে।
সম্প্রতি বিবিসি বাংলার উপস্থাপক শারমিন রমা ধানম-িতে ছিনতাইকারীর কবলে পরে মারাত্মক আহত হন। শুধু রমার ঘটনাই নয়, গত ১১ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে সাইকেলবাহী ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে ল্যাপটপ খোয়া যায় রিকশা আরোহী সাংবাদিক ফাওজুল কবিরের। গত ৮ ফেব্রুয়ারি দুপুরে ধানম-ির এক নম্বর রোডের ৩৯ নম্বর বাসার সামনে ব্যবসায়ী মিরাজকে অস্ত্র ঠেকিয়ে এবং তার কর্মচারী হারুনকে কুপিয়ে দুই লাখ টাকা লুট করে ছিনতাইকারীরা।
২০১১ সালের ২৮ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ধানম-ির সোবহানবাগ মসজিদের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন আয়েশা আক্তার রিপা। ৩/৪ জন ছিনতাইকারী মাইক্রোবাস থেকে রিকশা আরোহী রিপার ব্যাগ ধরে টান দেয়। ব্যাগের হাতল রিপার হতে আটকে থাকায় টান লেগে তিনি রিকশা থকে পড়ে যান। ওই অবস্থায় মাইক্রোবাসটি তাকে রাস্তায় ছেচড়ে প্রায় ৫০০ গজ টেনে নিয়ে যায়। একপর্যায়ে ছিনতাইকারীরা ব্যাগটি পেয়ে চলে যায়। পথচারীরা রিপাকে উদ্ধার করে ধানম-ির বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পুলিশ মো. আবুল কালাম, মো. হেমায়েত হোসেন ওরফে হিমু ও মো. আলমগীর হোসেন ওরফে রতনকে গ্রেফতার করেছিল।
ধানম-ি থানার সাবেক ওসি এবং বর্তমানে শাহবাগ থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক এ প্রতিবেদককে বলেন, প্রথমদিকে ওসি হয়ে সেখানে যাবার পর ছিনতাই নিয়ে বেশ ঝামেলায় পড়ে গিয়েছিলাম। পুলিশি তৎপরতা বৃদ্ধি করে বহু কষ্টে এসব কমাতে সক্ষম হয়েছিলাম।
তিনি বলেন, পুলিশের রমনা জোনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছিনতাই প্রবণ এলাকা ধানম-ি। এখানে অসংখ্য গলি রয়েছে, যার একটি অন্য একাধিক গলির সঙ্গে যুক্ত। এমন অবস্থা ছিনতাইকারীদের ভীষণ অনুকূলে, ছিনতাই শেষে নির্বিঘেœ পালাতে পারে। এখানে আর্থিক প্রতিষ্ঠান, মার্কেট রয়েছে প্রচুর। এছাড়া এলাকাটি আবাসিক, এখানে যারা বসবাস করছেন, বেশিরভাগই আর্থিকভাবে সচ্ছল। ছিনতাইকারীদের একটি লক্ষ্যই থাকে, এখানকার কাউকে ছিনতাই করতে পারলে ব্যাগে ভাল অংকের টাকা পাওয়া যাবে, নয়তো দামি মোবাইল ফোন পাওয়া যাবে।
বর্তমান ওসি নূরে আজম মিয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, ধানম-িতে ছিনতাইর ঘটনা অনেক কমেছে। তারপরও সাবধান থাকার বিকল্প নেই। নিয়মিত পুলিশি টহলের পাশপাশি আরও নানা ধরনের পরিকল্পনা রয়েছে। পর্যায়ক্রমে এসব বাস্তবায়ন করা হবে। যত যা-ই করা হোক, পথেঘাটে চলাচলের সময় সচেতন থাকলে অঘটন কমবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম