আতাতুর্ক বিমানবন্দরে হামলাকারীরা একমাস আগেই ইস্তাম্বুলে আসে
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইস্তাম্বুলে আতাতুর্ক বিমানবন্দরে আত্মঘাতী হামলাকারী তিনজন একমাস আগে সিরিয়ার রাক্কা থেকে ইস্তাম্বুলে আসে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাতে জানিয়েছে গণমাধ্যম। তাদের বিস্তারিত পরিচয় নিশ্চিত হতে সিসিটিভি ও মোবাইলে ধারণকৃত ছবি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্থানীয় গণমাধ্যম হামলাকারী দু’জনের নাম প্রকাশ করলেও সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই জানানো হয়নি। এদিকে, জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস-কে সহায়তার অভিযোগে বৃহস্পতিবার তুরস্কের সন্ত্রাস দমন ইউনিট ৩ বিদেশি নাগরিকসহ ১৩ জনকে আটক করে পুলিশ। তবে এখন পর্যন্ত কেউ হামলার দায় স্বীকার না করায় রহস্যের জাল কাটছে না। সময়টিভি
অশ্রুসিক্ত চোখে প্রিয়জনকে শেষ বিদায়। বৃহস্পতিবার ইস্তাম্বুলের আতাতুর্ক বিমানবন্দরে আয়োজিত বিদায় অনুষ্ঠানে সামিল হন সর্বস্তরের মানুষ। হামলাস্থলে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন। মসজিদে মসজিদে হয় বিশেষ দোয়া। নিহতদের একজন স্বজন বলেন, আমি স্ত্রী আর সন্তানদের টার্মিনালে রেখে বাইরে ট্যাক্সি ঠিক করতে এসেছিলাম। ঠিক ওই সময় বোমা বিস্ফোরণে পরিবারের ৫ সদস্যকে হারালাম। মাত্র ৪ মিটার ব্যবধানের কারণে আমি বেঁচে গেছি ঠিকই। কিন্তু এই বেঁচে থাকা অর্থহীন। তুরস্কের জাতিসংঘ মিশনের শোক বইতে স্বাক্ষরের পাশাপাশি নিহতের স্বজনদের প্রতি সমবেদনা জানান জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন। ব্রাসেলসে ইইউ এর নিয়মিত বৈঠক শুরুর আগে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। সন্ত্রাস দমনে বৈশ্বিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইপ এরদোয়ান।
বৃহস্পতিবার তুরস্কের সন্ত্রাস দমন ইউনিট ১৬টি স্থানে অভিযান চালিয়ে ৩ বিদেশি নাগরিকসহ ১৩ সন্দেহভাজন আইএস জঙ্গিকে আটক করে। তারা জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস-কে অর্থ, উপকরণ ও সদস্য সহায়তা দিতো বলে অভিযোগ রয়েছে। এদিকে এক সরকারি কর্মকর্তার বরাতে গণমাধ্যম জানায়, হামলাকারী তিনজন রাশিয়া, উজবেকিস্তান ও কিরগিজস্তানের নাগরিক। তাদের মধ্যে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞার তালিকাভুক্ত রুশ নাগরিক আকমেদ চাতায়েভ রুশ ভাষী আইএস জঙ্গিদের প্রশিক্ষণদাতা হিসেবে কাজ করতো বলে জানায় গণমাধ্যম। অপর একজনের নাম ওসমান ভাদিনোভ উল্লেখ করা হলেও তৃতীয় জনের পরিচয় মেলেনি। তারা তিনজনই হামলার উদ্দেশ্যে একমাস আগে সিরিয়ার রাক্কা থেকে ইস্তাম্বুলে আসে। হামলার ধরণ দেখে যুক্তরাষ্ট্র ও তুর্কি সরকার জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস সম্পৃক্ততার বিষয়টি ধারণা করলেও বিরোধী দলের অভিযোগ সরকারের চরমপন্থি গোষ্ঠী এই হামলা চালাতে জঙ্গিদের উস্কে দিয়েছে। এ বিষয়ে সংসদীয় তদন্তের প্রস্তাব বাতিলের নিন্দা জানান তারা। হামলার দু’দিন পর আতাতুর্ক বিমানবন্দর খুলে দেয়া হলেও নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি ছিলো চোখে পড়ার মতো। মঙ্গলবারের ওই হামলায় নিহতদের মধ্যে ২৪ জন তুরস্ক ও বাকিরা ১২ টি দেশের নাগরিক বলে জানা গেছে।