আমিন ইকবাল : ঈদের নামাজ আদায়ের আগেই ফিতরা পরিশোধ করার আহ্বান জানিয়েছেন মাদরাসাতুল বালাগ ঢাকার প্রিন্সিপাল মুফতি আহসান শরিফ। দৈনিক আমাদের অর্থনীতি ও আমাদের সময় ডটকম আয়োজিত রমজানবিষয়ক বিশেষ আয়োজন ‘আমাদের রমজান’-এ তিনি বলেন, রমজানের রোজা ত্রুটিমুক্ত ও গরিবের ঈদকে আনন্দময় করতে ধনীদের ওপর সদকাতুল ফিতর বা ফিতরা আদায় ওয়াজিব করা হয়েছে। সদকাতুল ফিতর ঈদের দু-তিন দিন আগে আদায় করলে অধিক সওয়াব পাওয়া যায়। ঈদের নামাজে যাওয়ার আগে আদায় করা সুন্নত। তবে ঈদের নামাজের আগে আদায় করতে না পারলে ঈদের নামাজের পর অবশ্যই আদায় করতে হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) সাদাকায়ে ফিতরের ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেনÑ যেন তা লোকেরা নামাজের উদ্দেশে বের হওয়ার আগেই আদায় করে। নবী করিম (সা.) নিজেও ঈদের দু-একদিন আগে ফিতরা আদায় করতেন। [আবু দাউদ]
মুফতি আহসান শরিফ বলেন, মহানবী (সা.) ঈদের দু-তিনদিন আগেই লোকদের একত্র করে ফিতরা বের করার নির্দেশ দিতেন। এতে করে গরিব-মিসকিনরা নিজ নিজ প্রয়োজন পূরণে সক্ষম হবেন এবং ঈদের দিনে তারাও পানাহারের ব্যবস্থা করতে সমর্থ হবেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) রোজাদার ব্যক্তির অসৎ কাজকর্ম থেকে সিয়ামকে পবিত্র করার জন্য এবং অভাবীদের ঘরে খাদ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য সাদাকাতুল ফিতরের বিধান দিয়েছেন। যে ব্যক্তি ঈদের নামাজের আগে এ ফিতরা আদায় করে দেবেন, তা জাকাত হিসেবে কবুল হবে আর নামাজের শেষে আদায় করা হলে তখন তা সদকা হিসেবে কবুল হবে।’
দৈনিক আমাদের অর্থনীতির সিনিয়র সহ-সম্পাদক মুফতি হুমায়ুন আইয়ুবের উপস্থাপনায় তিনি আরও বলেন, দ্বিতীয় হিজরিতে উম্মতে মুহাম্মদির ওপর রমজান মাসের রোজা ফরজ করার সঙ্গে রাসুলুল্লাহ (সা.) মুসলমানদের ‘সদকাতুল ফিতর’ আদায় করার নির্দেশ দেন। একে সাধারণত রোজার ‘ফিতরা’ বলা হয়। এটা মূলত মাহে রমজানেরই নির্ধারিত সদকা বা দান। শরিয়তের পরিভাষায় রমজান মাস শেষে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন উপলক্ষে মাথাপিছু যে নির্দিষ্ট পরিমাণ আর্থিক সাহায্য গরিব-মিসকিনদের সদকা করা হয়, একে ‘সদকাতুল ফিতর’ বলে।
তিনি বলেন, যে ব্যক্তির কাছে ঈদের দিন সুবহে সাদিকের সময় জীবিকা নির্বাহের অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ ব্যতীত সাড়ে ৭ তোলা স্বর্ণ অথবা সাড়ে ৫২ তোলা রূপা অথবা সমমূল্যের অন্য কোনো সম্পদ থাকে তার উপর সদকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব। এ পরিমাণ সম্পদকে শরিয়তের পরিভাষায় ‘নিসাব’ বলা হয়। প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের উপর সাদাকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব। নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিককে সদকাতুল ফিতর আদায় করতে হবে। এসব সম্পদ বা অর্থ যদি কারও হাতে ঈদের দিন সুবহে সাদিকের সময়ও আসে, তবু তাকে ফিতরা দিতে হবে। কেউ যদি নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক নাও হন অথচ আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সদকাতুল ফিতর আদায় করেন, তাহলে তিনি অশেষ সওয়াব পাবেন। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম