
গুলশানের ঘটনায় প্রমাণিত ক্র্যাকডাউনের উদ্দেশ্য ছিল বিএনপিকে দমন : খালেদা
কিরণ সেখ : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, শ্যামানন্দ দাসকে কুপিয়ে হত্যা ও গুলশানের ঘটনায় প্রমাণিত হয়েছে, সরকারের সপ্তাহব্যাপী ক্র্যাকডাউনের উদ্দেশ্য ছিল বিএনপি দমন, জঙ্গিবাদ দমন নয়। গতকাল শনিবার দুপুরে এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়া বলেন, উগ্রবাদ নির্মূলে সরকার আমাদের আহ্বানকে উপেক্ষা করে বিএনপির প্রতি বিষোদগারেই ব্যস্ত রয়েছে এবং বিএনপিকে অভিযুক্ত করতে ব্লেমগেম খেলতে গিয়ে সরকার জঙ্গিদের স্বাস্থ্যবর্ধন করছে। এরপরও উগ্রবাদ শক্তি নির্মূল করতে দলমত নির্বিশেষে পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সরকারের প্রতি আবারও আহ্বান জানাচ্ছি আমরা।
শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপরাসনের বিবৃতি গণমাধ্যমের সামনে পড়ে শোনান দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
গুলশান রেস্টুরেন্টের ঘটনা উগ্রবাদী দুষ্কৃতকারিদের কর্তৃক বিদেশি নাগরিকসহ বিশজনের মতো মানুষকে জিম্মি করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদেরকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণের ফলে সৃষ্ট প্রাণবিনাশী ঘটনা অন্ধ, হিংস্রতা ও বিকৃত রুচির পশুপ্রবৃত্তি বলে মন্তব্য করেন খালেদা জিয়া। বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আমি আবারও সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি- আসুন এই নিষ্ঠুর বিবেকবর্জিত গণতন্ত্র ও সভ্যতাবিরোধী উগ্রবাদী শক্তিকে নির্মূল করতে দলমত নির্বিশেষে সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় কাজ করি। সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় এখনই এই উগ্রবাদী শক্তিকে দমন করতে না পারলে এরা দীর্ঘতম যুদ্ধ চালিয়ে দেশের জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা কঠিন করে তুলবে।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, অগণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার ফলে সৃষ্ট অগণতান্ত্রিক সংস্কৃতি মিলে মিশে দেশে এমন এক রাজনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে যা পৈশাচিক স্বৈরতন্ত্রে অধ:পতিত হয়েছে। যার বিকৃত প্রতিক্রিয়া সারাদেশে ফুটে উঠতে শুরু করেছে। গত শুক্রবার রাতের দুষ্কৃতকারিদের নির্মম রক্তাক্ত অভ্যুত্থান দেশে বিরাজমান দু:শাসনেরই বহি:প্রকাশ। দেশে বিদ্যমান বহুমাত্রিক স্বৈরতান্ত্রিকতার কারণেই আনাচে-কানাচে উগ্রবাদ বাসা বেঁধেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
দেশের নিরাপত্তা বাহিনীসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যে সমস্ত সদস্য অটুট মনোবল ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই রক্তাক্ত জিম্মি ঘটনাকে মোকাবিলা করেছেন তাদের ধন্যবাদ জানান খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, আমি দেশবাসী ও আমার দলের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। গতরাতের ঘটনায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যারা নিহত হয়েছেন তাদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে পরিবার ও স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন এবং আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করেন তিনি।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী গুলশানে সংঘটিত সন্ত্রাসী ঘটনায় সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী ও কূটনৈতিকদের নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এবং তাদের নিরাপত্তা বিধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। গুলশানের দুষ্কৃতকারিদের কর্তৃক সংঘটিত প্রাণবিনাশী ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানান খালেদা জিয়া।
বিএনপি চেয়ারপারসন বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এই সহিংস ঘটনায় জড়িত প্রকৃত দুষ্কৃতকারিদের শাস্তি দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর হবে এবং এদের নেটওয়ার্ক খুঁজে বের করে তা নির্মূল করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো সক্ষম হবে। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম
