টিমে রয়েছেন বেসামরিক সরকারি চিকিৎসকরা নিরাপত্তার কারণে সিএমএইচে হচ্ছে ময়নাতদন্ত
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী ও এস এম নূর মোহাম্মদ : গুলশানে স্প্যানিশ রেস্টুরেন্টের ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ হত্যাকা-ের শিকার হওয়া ২০ জনের মরদেহ ও ৬ জঙ্গির মরদেহ ময়নাতদন্ত হচ্ছে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল সিএমএইচ-এ। ওইসব লাশের ময়নাতদন্ত করছেন বিশেষজ্ঞদল। এরমধ্যে রয়েছেন বেসামরিক সরকারি চিকিৎসকরা। তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালসহ অন্য মেডিকেল কলেজ থেকে নেওয়া হয়েছে। তারা ময়নাতদন্তগুলো পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে লাশ তদন্ত করছেন। এই ধরনের লাশ ময়নাতদন্ত করার বিষয়টিতে বিশেষজ্ঞরা গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছেন। সামরিক বাহিনীর চিকিৎসকরা ময়নাতদন্ত করছেন না।
সূত্র জানায়, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে লাশ ময়নাতদন্ত করার জন্য সব ধরনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। জঙ্গিদের লাশেরও ময়নাতদন্ত হবে এখানে।
সূত্র জানায়, গুলশানের জঙ্গি হামলার ঘটনাটি অনেক বড়। বিষয়টি সবার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দিয়েছে। সেই সঙ্গে এই ঘটনায় সফল অভিযান পরিচালনার জন্য সামরিক বাহিনী গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে।
সূত্র জানায়, জঙ্গিরা ধারণা করে থাকতে পারে তারা অভিযান সফল করে ফিরে যাবে। কিন্তু তাদেরকে উদ্ধার করার জন্যও কেউ কেউ অন্যত্র অবস্থান নিয়ে থাকতে পারে। পাশাপাশি হত্যাকা-ের ঘটনার পর ওই হামলা শেষ হলে ও তারা নিহত হলে পরবর্তী কর্মকা- কি হবে সেই ধরনেরও পরিকল্পনা থাকতে পারে। জঙ্গিরা ঘটনার সময় নিহত হওয়ার ঘটনায় আরও আতঙ্ক তৈরি করার জন্য আরও বড় ধরনের হামলার পরিকল্পনা করতে পারে।
বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, এই ঘটনার পর পর তাদের সদস্যদের হারানোর কারণে তারা ওইসব জঙ্গির লাশ ছিনতাই করার চেষ্টা করতে পারে। যে হাসাপাতালে রাখা হবে সেখানেও হামলা করতে পারে। এছাড়াও অন্য যেকোনো ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারে। নানা কারণে ও সার্বিক দিক বিবেচনা করেই পরিস্থিতি যাতে আর কোনো ধরনের অবনতি না হয় সেই সব বিবেচনা করেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিরাপত্তা জনিতকারণেই রাখা হয়েছে। এছাড়াও যেসব বিদেশি ও দেশীয়দের তারা হত্যা করেছে তাদের লাশও তারা ছিনিয়ে নিতে পারে। এই কারণে ঘটনা পরবর্তী নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁিকর বিভিন্ন দিক বিবেচনা করেই সেখানে ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে। লাশগুলো ময়নাতদন্ত পরবর্তী সময়েও সেখানে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে হস্তান্তরের আগ পর্যন্ত।
সিএমএইচ-এ লাশ ময়নাতদন্ত করার কারণে পরবর্তী সময়ে মামলায় বা আইনী জটিলতা তৈরি হবে কিনা এই ব্যাপারে জানতে চাইলে সূত্র জানায়, এই ধরনের কোনো আইনী জটিলতা নেই।
সিএমএইচ-এ লাশ ময়নাতদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, এটি সন্ত্রাসী হামলা, এখানে নিরাপত্তার বিষয়ও ছিল। সিএমএইচ-এ নিতে আইনগত কোনো অসুবিধা নেই। আর পোস্টমর্টেম যেকোনো জায়গায় হতে পারে।
অপরদিকে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির বর্তমান সভাপতি ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বলেন, ঢাকা মেডিকেলে নেওয়াটা প্রাকটিস আরকি। গুলশানে যেটি হয়েছে বাংলাদেশের ইতিহাসে এমনটি নেই। এটি স্পর্শকাতর বিষয়। নিরাপত্তার কারণে সেখানে নেওয়া হয়েছে। এটি ঠিকই আছে। ঢাকা মেডিকেলেই নিতে হবে এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই বলেও জানান তিনি।
এছাড়া জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, এতে আইনগত কোনো বাধা নেই। যেহেতু সেনাবাহিনীর অধীনে কমান্ডো অভিযান হয়েছে, সেহেতু তাদের অধীনে রাখা হয়েছে। ঢামেকের চাইতে সিএমএইচ-এ নিয়ে যাওয়ায় বরং ভাল হয়েছে। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম