ঘটনাস্থলে আবারও ক্রাইমসিন ও বোম ডিসপোজাল টিম এলাকায় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা
আজাদ হোসেন সুমন : জঙ্গি হামলা ও জিম্মি নাটকের অবসান হলেও হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁর আশপাশ এলাকার মানুষের মধ্যে এখনও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা রয়ে গেছে। জরুুর প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাসা থেকে বের হচ্ছেন না। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে একই সঙ্গে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রাইম সিন ইউনিটের একটি দল ও ডিবির বোমা নিস্ক্রিয়করণ দলও প্রবেশ করে।
সিআইডির পরিদর্শক আবুল হাসান বলেন, আলামত সংগ্রহ করার জন্য তারা রেস্তোরাঁয় এসেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বোমা নিস্ক্রিয়করণ দলের গোয়েন্দা কর্মকর্তা বলেন, আজ আবারও আসতে হলো কারণ এটা ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনা। ফলে বিষয়টি স্পর্শকাতর। ঘটনাস্থল বা আশপাশে আরও বোমা রয়ে গেছে কিনা তা শতভাগ নিশ্চিত হতে হবে।
এসময় জঙ্গি হামলা ও কমান্ডো অপারেশন থান্ডার বোল্টে প্রায় বিধ্বস্ত হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁর সামনে লেকভিউ কারপাকিংয়ে ৫টি প্রাইভেটকার পড়ে থাকতে দেখা যায়। এগুলোর মালিক গতকাল পর্যন্ত গাড়ি নিতে আসেননি। এলাকা ঘুরে আরও দেখা যায় থমথমে পরিবেশ। যৌথবাহিনী চলে যাওয়ার পর ওই রাস্তায় যাওয়ার সাহস করেননি অনেকেই। বিভিন্ন বাসায় যারা রাঁধুনি, গৃহকর্মীরা রোববার সকালে কাজে এসে তারাও এই বিপত্তিতে পড়েন। মাত্র দুদিন আগেও যেখানে ছিল প্রাণচাঞ্চল্য। সেখানে বিরাজ করছে নিস্তব্ধতা আর আতঙ্ক। ঘটনার ভয়াবহতায় এলাকার মানুষ কিংকর্তব্য বিমূঢ় হয়ে পড়েছে। আর হলি আর্টিজানের ক্যাম্পাস সবুজ ঘন ঘাসে বাবা মায়ের সাথে এসে শিশুরা খেলাধুলায় মেতে উঠতো। সেই ক্যাম্পাস এখন জৌলুসহীন মৃতপুরী। ভবনের দেয়ালে গুলির দাগ। কাচ ভাঙ্গা।
গতকাল সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, বাসা থেকে বের হলেই পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের মুখে পড়ছেন ঘটনাস্থলের আশপাশ এলাকার বাসিন্দারা। অতিরিক্ত কড়াকড়িকে অনেকেই অস্বস্তিকর বলে উল্লেখ করেছেন। ৭৯ নম্বর সড়কসহ আশপাশের সড়কের দোকানপাটও বন্ধ রয়েছে। এলাকাবাসী এখনও শঙ্কিত। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে ঘর থেকে বের হতে দেখা যায়নি। ৭২ নম্বর বাসা থেকে বের হয়ে মাসুদা নামের এক গৃহিণী মহিলা পুলিশের তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের মধ্যে পড়েন। দুপুর ১টার সময় ওই গৃহবধূ মহিলা পুলিশকে পাল্টা প্রশ্ন করেন। আমরা এই এলাকার বাসিন্দারা দুদিন ধরে বের হতে পারছি না। আপনারা যা করছেন এটা রীতিমত হয়রানি। আমাদের বাসায় কোনো আত্মীয়-স্বজন আসতে পারছে না। এ অবস্থা কদিন চলবে।
এসময় ৭৮, ৭৭, ৭৬ ও ৭৫ নম্বর সড়কসহ আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা যায়- এসব রোডে প্রাইভেটকার এমনকি রিকশা প্রবেশেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। ফলে বাসিন্দাদের পায়ে হেঁটেই যাতায়াত করতে হচ্ছে। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি