হিন্দুদের উপর অত্যাচার বন্ধ না হলে মৈত্রী এক্সপ্রেস বন্ধ করে দেব : দিলীপ ঘোষ
সালমা পারভীন : বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচার বন্ধ না হলে মৈত্রী এক্সপ্রেস বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিলেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। গত শুক্রবার বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচারের প্রতিবাদে বিজেপি রাজ্য দফতর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। বিক্ষোভ মিছিল ধর্মতলায় ওয়াই চ্যানেলে পৌঁছানোর পর একটি বিক্ষোভ সমাবেশ আয়োজিত হয়। ওই বিক্ষোভ সমাবেশে বিজেপি রাজ্য সভাপতি একথা বলেন। যুগশঙ্খ
বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বললেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচার বন্ধ না হলে বেনাপোল, পেট্রাপোল বন্ধ করে দেব। মৈত্রী এক্সপ্রেস বন্ধ করে দেব। বাংলাদেশের সাথে কোনো মৈত্রী থাকবে না। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ততদিনই ভালো থাকবে, যতদিন হিন্দুরা ওখানে ভালো থাকবে।’
দিলীপ বাবু বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে এনে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে এই বাংলা রক্ত ঝরিয়েছে। অথচ আজ ওপার বাংলার মাটিতে রক্ত ঝরছে সংখ্যালঘু হিন্দুদের। আজও ঝিনাইদহে একজন হিন্দু পুরোহিতকে খুন করা হয়েছে।’
উল্লেখ্য, বেশ কিছুদিন ধরে বাংলাদেশে হিন্দু পুরোহিতদের কুপিয়ে হত্যার মতো ঘটনা ঘটেছে। হিন্দু মেয়েদের উপর যৌন অত্যাচারের ঘটনাও ঘটেছে। উগ্রপন্থী সংগঠন আইএসের পক্ষ থেকে ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনের সহ-সম্পাদককে খুনের হুমকি দিয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এরপর ঢাকায় রামকৃষ্ণ মিশনের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়। বিজেপি রাজ্য সভাপতি অভিযোগের সুরে বলেন, ‘এখানকার রাজনীতি সর্বস্ব দলগুলো বাংলাদেশে হিন্দুহত্যার বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি। বিধানসভায় কেউ একটাও আওয়াজ তুলছে না। অথচ বিপজ্জনকভাবে বাংলাদেশে হিন্দুদের সংখ্যা কমতে কমতে এখন মাত্র সাড়ে ৮ শতাংশে এসে দাঁড়িযেছে। এখানকার বিজ্ঞজনেরা বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে মুখ খোলেন, আন্দোলন করেন। অথচ এই ঘটনার প্রতিবাদে কেউ একটা শব্দও উচ্চারণ করছেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাইছি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত হোক। যতদিন হিন্দুদের উপর অত্যাচার বন্ধ না হবে, ততদিন আন্দোলন চলবে। আমরা এ বিষয় নিয়ে দিল্লি সরকারের কাছে দরবার করব।’ এদিন বিজিপির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক রাহুল সিনহা বিক্ষোভ সমাবেশে বলেন, ‘আমাদের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এখন কেবল অনুপ্রবেশ বন্ধের বিষয়ে কথা বলছেন। শুধু অনুপ্রবেশ নিয়ে কথা বললে হবে না, বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর অত্যাচারের বিষয়েও সেদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলুন। আমরা সবাই জানি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। শেখ হাসিনাকে পশ্চিমবঙ্গের উদ্বেগের কথা জানান।’
বিক্ষোভ সমাবেশে ও মিছিলে অংশ নেন বিজেপি নেত্রী রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, লকেট চট্টপাধ্যায়, সাধারণ সম্পাদক দেবশ্রী চৌধুরী, বিজেপির উদ্বাস্তু সেলের আহ্বায়ক ড. মোহিত রায়, সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার, প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুভাষ সরকার প্রমুখ।