সিলকট তদন্ত কমিশনের রিপোর্ট কাল ফেঁসে যেতে পারেন টনি ব্লেয়ার
ইমরুল শাহেদ : আগামী ৬ জুলাই প্রকাশিত হবে সিলকট তদন্ত কমিশন রিপোর্ট। ইরাক যুদ্ধ নিয়ে ২০০৯ সালে সিলকট কমিশন গঠিত হয়। দীর্ঘ ছয় বছর এই কমিশন ইরাক যুদ্ধের যাবতীয় তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করতে থাকে। স্যার জন সিলকট গত বছর বলেছিলেন, এ বছর তিনি রিপোর্টটি জনসম্মুখে প্রকাশ করতে সক্ষম হবেন। এই রিপোর্ট প্রকাশের আগেই ইরাক যুদ্ধের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার। তিনি এই যুদ্ধের দায় চাপান গোয়েন্দা সংস্থার ওপর। কিন্তু বিশ্লেষকদের অভিমত সিলকট রিপোর্ট প্রকাশ হলে ফেঁসে যেতে পারেন ব্লেয়ার। এই যুদ্ধ নিয়ে তিনি মন্ত্রীসভা, পার্লামেন্ট এবং দেশের জনগণকে মিথ্যা তথ্য দেন। ব্লেয়ারের পাশাপাশি স্যার রিচার্ড ডিয়ারলাভ, জ্যাক স্ট্র এবং স্যার জন স্কারলেট দোষী সাব্যস্ত হতে পারেন। ২০০৩ সালে শুরু হওয়া ইরাক যুদ্ধে নিহত ব্রিটিশ সৈনিকদের পরিবার সিলকট তদন্ত কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে তাৎকালীন ্িব্রটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। সিলকট তদন্ত কমিশন ‘দি ইরাক ইনকোয়ারি’ নামে প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেছে ২৬ লাখ শব্দে। মিডল ইস্ট আইয়ের প্রতিবেদনে নিহত সৈনিকদের অভিভাবকরা হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিসি) মামলা করবেন বলে উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও তারা কিছু ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ ও জেনারেলের বিরুদ্ধেও মামলা করবেন বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়। ৫২ বছর বয়সী রোজ জেন্টেলের পুত্র গর্ডন ২০০৪ সালে ইরাকের বসরায় মারা গেছেন। তিনি বলেছেন, ‘চরম মিথ্যাচারের জন্যও ব্লেয়ারের বিচার হওয়া উচিত।’ তিনি গত ১২ বছর থেকেই সুবিচার কামনা করে ব্রিটেন জুড়ে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বার্তা সংস্থা মী-কে বলেছেন, ‘ব্লেয়ার মিথ্যা বলেছেন। সিলকটের উচিত তাকে দায়ি করা। কিন্তু তদন্তের জন্য যথেষ্ট সময় নিয়ে ফেলা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্টে আমরা হয়তো আমাদের অনেক প্রশ্নেরই জবাব পাব না।’ ইরাকের এই যুদ্ধে নারী-পুরুষ মিলিয়ে ১৭৯ জন ব্রিটিশ সার্ভিসম্যান মারা গেছেন। সেখানে ব্রিটিশ সেনারা অবস্থান করেছেন আট বছর। এ সময়ে টনি ব্লেয়ার কোনো বাধা-বিপত্তির দিকেই কর্ণপাত করেননি। হেগে তার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হবে তার কোনো সদুত্তর তিনি আদালতে দাঁড়িয়ে দিতে পারবেন না। তবে আইসিসি থেকে বলা হয়েছে, তারা টনি ব্লেয়ারের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ গ্রহণ করবেন না। বরং তারা প্রয়োজনে খতিয়ে দেখতে চান ইরাক যুদ্ধে সম্পৃক্ত সেনারা সেখানে কি করেছেন। তাদের কর্ম তৎপরতা অনুসারে তাদেরকেই বিচারের আওতায় আনা যায়। ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কারো যুদ্ধে না যাওয়ার ব্যাপারটা আদালতের কোনো বিষয় নয়।