ড. বদরুল হাসান কচি
এবার চট্টগ্রামগামী এবং ময়মনসিংহগামী বাড়ি ফেরা মানুষদের ঈদের বাড়তি আনন্দ হিসেবে যুক্ত হয়েছে বাড়ি যাওয়ার প্রধান সড়কটি দুইলেন থেকে চারলেনে উন্নীত হওয়া এবং ঘরমুখো মানুষদের যাতায়াত সহজ করতে সড়কটি আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দিয়েছে সরকার। বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে আড়ম্বরপূর্ণ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই দুইটি জাতীয় মহাসড়ককে চারলেনে উন্নীত করে দুই বিশাল অঞ্চলের জনগোষ্ঠীকে ঈদ উপহার দিয়েছেন বলে ঘোষণা দেন। আসলেই অনেক বড় ঈদ উপহার। চারলেনে উন্নীত করার দাবি কেবল এই অঞ্চলের বাসিন্দাদের নয়, এই সড়ক আমাদের জাতীয় অর্থনীতির জন্য বিশাল গুরুত্ব বহন করে। বিশেষ করে বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের সঙ্গে মূল রাজধানী ঢাকার সঙ্গে দ্রুত ও কমসময়ে যোগাযোগ স্থাপনের গুরুত্ব অপরিসীম।
২ জুলাই উদ্বোধনের পর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার নিয়ে চট্টগ্রাম মহাসড়ক ধরে নিজ বাড়ি ফেনী আসলাম। গেল বছর ডিসেম্বরে শেষ এসেছিলাম।….স্বাভাবিকভাবে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই একই সড়ক দিয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের পথে ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি ছাড়াও বড় বড় বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, লরি নিয়মিত যাতায়াত করত ফলে জ্যাম… তখনও চারলেনের নির্মাণ কাজ অনেকটুকু বাকি ছিল। সেই সময়ের পরিস্থিতি একটু তুলে ধরে বর্তমানের চারলেনের মহত্ত্বটি কিঞ্চিৎ তুলে ধরছি। এই সড়ক চারলেনে উন্নীত করায় সুনির্দিষ্ট কিছু সুফল ভোগ করছে দেশবাসী। স্বাভাবিকভাবে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই একই সড়ক দিয়ে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের পথে ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি ছাড়াও বড় বড় বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, লরি নিয়মিত যাতায়াত করত ফলে জ্যাম পড়ে থাকা ছিল নিত্যদিনের চিত্র। তাই ৬-৭ ঘণ্টার আগে কোনোভাবেই ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম পৌঁছানো সম্ভব ছিল না কিন্তু চারলেন হওয়ায় রাস্তা অনেকটা ফাঁকা থাকছে, যার ফলে এখন সেই সময় নেমে আসছে ৫ ঘণ্টায়। প্রমাণ আমি নিজেই; গতদিন আমার বাড়ি ফেনীতে আসতে সময় লেগেছে ৩ ঘণ্টা অথচ তার আগে এই পথে সময় লাগত ৪ ঘণ্টা। সময় বেঁচে যাওয়ায় এই প্রভাবটি বেশি পড়বে ব্যবসা বাণিজ্যে। এখন মাল পরিবহনে ভাড়া অনেক কমে আসছে। সেই সঙ্গে অতিরিক্ত সময় পেয়ে ব্যবসায় আরও গতি আসছে। সমৃদ্ধ হবে দেশের অর্থনীতি।
কেবল অর্থনীতি উন্নয়নের এই চিত্রই নয়, আরও একটি বিশাল সুফল ভোগ করছে জনগণ। এতদিন দেখেছি সড়কে যাত্রী পরিবহনে বাসগুলো ধীর গতিতে চলা ট্রাক কিংবা কাভার্ড ভ্যানগুলো পেছনে ফেলে সামনে এগিয়ে যাবার জোর প্রতিযোগিতা করত। গন্তব্যে পৌঁছানো পর্যন্ত বাসগুলো প্রচুর পরিমাণে ওভারটেকিং করে; ফলে নিয়মিত সড়ক দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটে। এখন ওভারটেকিং যেমন কমে আসছে তেমনি সড়ক দুর্ঘটনার মাত্রাও আগের চেয়ে অনেক কমে আসছে। যাত্রীদের মাঝে অনিরাপদ যাতায়াতের ঝুঁকি দূর হয়েছে। আর এই ধরনের ঝুঁকি ঈদের সময় দ্বিগুণ ছিল। তাই বলতেই, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সত্যি আমাদের সকলের জন্য ঈদে বড় উপহার দিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে, আপনার সরকারকে।
লেখক : আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন