সন্দেহ হলেই কাউকে হত্যা করা চলবে না : ভারতীয় সুপ্রিম কোর্ট
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সেনাবাহিনীর ক্ষমতায় রাশ টানার নির্দেশ দিয়েছেন ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। যথেচ্ছভাবে ক্ষমতার ব্যবহার করতে পারবে না সেনা এবং আধাসেনা, জানিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। শুক্রবারই এমন রায় দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি মদন লোকুর ও উদয় উমেশ ললিতের বেঞ্চ জানান, মণিপুরের পুলিশ এবং সেনাবাহিনী মাত্রাতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করতে পারবে না। এ ধরনের অভিযোগ উঠলে ফৌজদারি আদালতে বিচার হবে।
এদিকে ১৯৭৮ সাল থেকে মণিপুরে ১৫২৮ জনকে বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করার অভিযোগ রয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে। এসব অভিযোগ নিয়েও বিস্তারিত তথ্য তলব করেছেন সুপ্রিম কোর্ট। কোনো স্বতন্ত্র সংস্থাকে দিয়ে এই বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভুয়া এনকাউন্টারের এসব অভিযোগের ক্ষেত্রে, সেনাবাহিনীর নিজস্ব তদন্তেও আদালতের কোনো আপত্তি নেই বলে জানানো হয়েছে। নিহতদের পরিবারগুলোর এক সংগঠনের আবেদনের ভিত্তিতেই এ রায় দিয়েছেন দেশটির শীর্ষ আদালত। কেন্দ্রীয় সরকার এবং সেনাবাহিনী ফৌজদারি আদালতে অভিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষীদের বিচার থেকে ছাড় দেওয়ার আবেদন জানিয়েছিল। কিন্তু সেই আবেদন মঞ্জুর করেননি আদালত। টাইমস অব ইন্ডিয়া
বিচারপতি লোকুর বলেছেন, রাষ্ট্র যখন মাত্রাতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগ করে কোনো ব্যক্তিকে হত্যা করে, তখন সেটা বিচারবহির্ভূত হত্যা ছাড়া অন্যকিছু নয়। সমাজ ও আদালত এ ধরনের মৃত্যুর ঘটনা মেনে নিতে পারে না। মণিপুরে প্রথাবহির্ভূত যুদ্ধ চলছে বলে সেনাবাহিনী দাবি করলেও সেখানে এমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি, যাতে দেশের কোনো অংশের নিরাপত্তা বিঘিœত হয়। সরকার এমন কোনো ঘোষণাও করেনি। উল্লেখ্য, বিগত কয়েক দশক ধরে বিশেষ ক্ষমতা আইন জারি রয়েছে মণিপুর রাজ্যে। অশান্ত বা স্পর্শকাতর এলাকার ক্ষেত্রে এ আইনের বলে সেনাবাহিনীর হাতে এ ক্ষমতা দেওয়া থাকে। কার্যত আইনের ঊর্ধ্বে রাখা হয় তাদের। যেকোনো অভিযান বা অপারেশনে অনুমতিরও প্রয়োজন হয় না। কিন্তু বারবার এ ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ উঠেছে নিরীহদের ওপর অত্যাচারেরও।