সারাদেশে ঈদ উদযাপিত ঈদ আনন্দে রক্তের দাগ এরপরও জঙ্গি-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যের তাগিদ
দীপক চৌধুরী : জঙ্গি, সন্ত্রাস ও সব ধরনের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার প্রত্যয়ে বৃহস্পতিবার দেশব্যাপী উদযাপিত হয়েছে মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ইদুল ফিতর। দেশের কোটি কোটি মুসলমান সকালে ঈদগাহে কিংবা মসজিদে ঈদের নামাজ পড়ছেন। বরাবরের মতো এবারও রাজধানীতে ঈদের প্রধান জামাত হয়েছে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে।
সারাদেশের ঈদগাহ ও মসজিদগুলোতে ঈদের নামাজের পর ইমাম সাহেব বিশেষ খুৎবা পাঠ করেন এবং মুসল্লিদের নিয়ে বাংলাদেশ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি কামনায় বিশেষ মুনাজাতে অংশ নেন।
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবের দিনটি পার করল বাংলাদেশ। প্রায় সব জেলায় ঈদ জামাত সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে তিন স্তরবিশিষ্ট নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
এবারের ঈদ ছিল ভিন্ন আঙ্গিকে। মানুষের মধ্যে শঙ্কাও ছিল। মুসলিমদের সংযমের মাস রোজা। গুলশানে নৃশংস জঙ্গিহামলার রেশ না কাটতেই ঈদের দিন ফের হামলায় ভিন্ন এক আবহের সৃষ্টি হয়।
সকাল ৯টা পার হওয়ার আগেই কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাতের মাঠের মাত্র আড়াইশ মিটার দূরে পুলিশের ওপর হামলা চালায় একদল অস্ত্রধারী।
কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় কারা এ হামলা চালিয়েছে, কেন তারা ঈদের দিন হাজার হাজার মুসলমানের নামাজের পথে এই হত্যাকা- ঘটিয়েছে-তা স্পষ্ট হয়নি। হামলার দায়ও স্বীকার করেনি কেউ।
তাদের বোমায় নিহত হন দুই পুলিশ সদস্য। গোলাগুলির মধ্যে ঘরের মধ্যে গুলি ঢুকে প্রাণ হারান এক গৃহবধূ। সন্দেহভাজন এক হামলাকারীও গুলিতে নিহত হন।
গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিহামলায় দেশি-বিদেশি ২০ জনের মৃত্যুর পর এক সপ্তাহ পার না হতেই ঈদের সকালে এলো শোলাকিয়ায় এই ধাক্কা।
এর কঠোর নিন্দা জানিয়ে গণভবনে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, যেখানে ঈদের জামাত হবে, তার কাছাকাছি জায়গায় হঠাৎ আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা। এই ধরনের জঘন্য ঘৃণ্য অপরাধ যারা করে থাকে, তারা আদতে ইসলামে বিশ্বাস করে না, তারা ইসলামের শত্রু।
এর আগে সকালে বঙ্গভবনে ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, পরস্পরের সুখ-দুঃখ ও হাসি-কান্না ভাগ করে নেওয়ার পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের শিক্ষাই ঈদ দেয়।
‘নিন্দা আর ধিক্কার’ জানিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন, নিরীহ ও নিরাপরাধ মানুষকে যারা হত্যা করেছে তারা ভীরু ও কাপুরুষ। এরা মানবজাতির অগ্রগতির শত্রু।
আর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ বলেছেন, পবিত্র ঈদের দিন যারা এসব সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে পারে তারা ইসলামের শত্রু। এসব সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।