ওবামার বার্তা নিয়ে আজ ঢাকায় আসছেন নিশা দেশাই নিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশ-ভারত জোটে থাকতে চায় যুক্তরাষ্ট্র
উম্মুল ওয়ারা সুইটি : জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদ দমনে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির
প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এ বার্তা নিয়ে পররাষ্ট্র দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি নিশা দেশাই বিসওয়াল আজ রোববার দুইদিনের সফরে ঢাকায় আসছেন। দুই মাসের ব্যবধানে ঢাকায় এটি তার দ্বিতীয় সফর। সরকারের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের সাবেক কর্মকর্তা ও ইউএনডিপির বাংলাদেশ অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জুলহাজ মান্নানসহ দুজনকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার পর ৫ মে ঢাকা সফর করেন নিশা। সে সময়ে নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলেছে, জঙ্গি দমন ও নিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশ-ভারত কোনো সমন্বিত উদ্যোগ নিলে যুক্তরাষ্ট্রও সেই জোটে থাকার আগ্রহের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে আসছে এবছরের এপ্রিল মাসে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র এ বিষয়ে সমন্বিত উদ্যোগের অংশীদার হতে ভারতের সঙ্গেও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি।
গত ১ জুলাই এবং ৭ জুলাই পর্যায়ক্রমে গুলশানের হলি আর্টিজান এবং ময়মনসিংহের শোলাকিয়ায় জঙ্গিহামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছেও এ বার্তাটি পাঠিয়েছিন। তারই অংশ হিসেবে নির্ধারিত সময়ের আগেই দেশাই ঢাকা সফরে আসছেন বলে মনে করছে কূটনৈতিক সূত্রগুলো। ধারণা করা হচ্ছে, নিশার সফরে নিরাপত্তা ইস্যুটিই বেশি গুরুত্ব পাবে।
সরকারের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ধারণা করা হচ্ছে, চলতি সফরেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠক হতে পারে নিশা দেশাই বিসওয়ালের।
গত ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় ১ জন বাংলাদেশি আমেরিকানসহ ১৮ জন বিদেশি এবং ৪ জন বাংলাদেশি নিহত হন। ৭ জুলাই শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ঈদের জামাত চলাকালে ঈদগাহের অদূরে পৃথক সন্ত্রাসী হামলায় দুই পুলিশসহ ৪ জন নিহত হন। এ ঘটনার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য বাংলাদেশে ভ্রমণ সতর্কতা (ট্রাভেল অ্যালার্ট) নোটিস জারি করে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পরে গত শুক্রবার তা বাড়িয়ে বাংলাদেশ ভ্রমণে সর্বোচ্চ সতর্কতা নোটিস (ট্রাভেল ওয়ার্নিং) জারি করে দেশটি।
এর আগে গুলশান হামলার ঘটনায় ৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি টেলিফোনে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। ওই ফোনালাপে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবিরোধী অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে গুলশান হামলায় দায়ীদের ধরতে ও ভবিষ্যতে বাংলাদেশে সন্ত্রাসী তৎপরতা বন্ধে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চায় বলে শেখ হাসিনাকে জানিয়েছেন জন কেরি।
কেরি তার ফোনালাপে বাংলাদেশ সরকারকে তদন্তের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার জন্য উৎসাহিত করেন এবং প্রয়োজনে এফবিআইসহ যুক্তরাষ্ট্রের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম