টুইটারে জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে আইএস
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বজুড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে আইএস জঙ্গিরা সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে তরুণ-তরুণীদের ধর্মীয় বিভ্রান্তি ও তথাকথিত জিহাদে উদ্বুদ্ধ করতে অপপ্রচার চালালেও টুইটারে দ্রুত জনপ্রিয়তা কমছে জঙ্গিগোষ্ঠীটির। যুবক-যুবতীদের জিহাদি ভাবধারায় উদ্বুদ্ধ করার জন্য অনলাইনে প্রচার চালানোর উপর বিশেষ জোর দেয় এই জঙ্গি সংগঠন। ধনীর দুলাল-দুলালী আর উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত থেকে শুরু করে মাদ্রাসার গরিব ছাত্ররা পড়ে এদের খপ্পরে। দেয় অবাধ যৌনতা, মারণাস্ত্র ব্যবহার করে নিরীহ মানুষ হত্যা ও মাদকাসক্ত করে বিপ্লবের কথিত মন্ত্রণার আহ্বান। ধর্ষণ করতেও এদের কোনো নীতি নৈতিকতার বাধ নেই। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, গত দুই বছরে পাল্টা প্রচারের ফলে আইএসের মিথ্যা প্রচারে বিশেষ ফল হচ্ছে না। টুইটারে আগে যেভাবে সাড়া পেত এই সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী, তা এখন ৪৫ শতাংশ কমে গিয়েছে। এই প্রবণতাকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বড় সাফল্য হিসেবেই দেখছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে আইএসের মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক জোট গড়ে মার্কিন সরকার। জঙ্গিদের দমনে সামরিক অভিযান চালানো, আইএস-এ বিদেশি জঙ্গিদের যোগ দেওয়া আটকানো, অর্থের জোগান বন্ধ করা ছাড়াও কট্টরপন্থী ভাবধারা প্রচারের মাধ্যমে আরব দুনিয়ায় আইএসের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা কমানোই ছিল এই জোটের প্রাথমিক লক্ষ্য। অনলাইনে শুরু হয় পাল্টা প্রচার। আইএস কীভাবে মহিলা, শিশুসহ সাধারণ মানুষের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে তা তুলে ধরা হতে থাকে।
প্রথমদিকে অবশ্য বিশেষ লাভ হয়নি। কারণ, অনলাইনে যে বক্তব্য তুলে ধরা হতো তা লেখা হতো ইংরাজিতে। ফলে আরব দুনিয়ার অল্পসংখ্যক মানুষের কাছে তা পৌঁছত। পরে শুরু হয় আরবি ভাষায় প্রচার। এছাড়া প্রচারের মুখ হিসেবে তুলে ধরা হতে থাকে ধর্মীয় নেতা, যুব নেতা এবং বিভিন্ন সংগঠনের নেতাদের। আরব দুনিয়ার বিভিন্ন দেশের সরকার এবং স্কুলের মাধ্যমেও প্রচার চালানো হতে থাকে। এতেই ফল হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে সংস্থা এই অনলাইন প্রচারের দায়িত্বে রয়েছে সেই সংস্থার প্রধান মাইকেল লাম্পকিন বলেছেন, অনলাইনে আইএসের যে আধিপত্য ছিল তা এখন আর নেই। সোস্যাল মিডিয়ায় এই জঙ্গি সংগঠনের জনপ্রিয়তা কমছে। আইএসবিরোধীরা সোস্যাল মিডিয়ায় সরব হওয়ার ফলে যুবক-যুবতীদের এই জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেওয়ার ঝোঁক কমছে।
তারপরও ভয় ও ঝুঁকি বাড়ছে। বিশেষ করে ইরাক, সিরিয়া, লিবিয়ায় খুব একটা সুবিধা করতে না পেরে এ ধরনের জঙ্গি তৎপরতায় এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ার কোনো বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখা বিশেষ জরুরি হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ফিলিপাইন ও ভারতের মতো দেশগুলো থেকে অনেকে উধাও হচ্ছে আইএস জঙ্গিদের সঙ্গে যোগ দিতে অথবা সংগঠিত হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এদের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রচার ও যুব সমাজকে সতর্ক করে দেওয়া বিশেষভাবে জরুরি হয়ে পড়েছে।