বান্দরবানে জেএসএস সন্ত্রাসীদের ভয়ে গ্রামছাড়া শতাধিক পরিবার
মো. শাফায়েত হোসেন, বান্দরবান : বান্দরবানে আঞ্চলিক রাজনৈতিক সংগঠন জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) অস্ত্রধারী চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের ভয়ে গ্রাম ছেড়ে জেলা শহরে অবস্থান নিয়েছেন আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত শতাধিক পাহাড়ি পরিবার। রোববার সকালে বান্দরবান প্রেসক্লাবের সামনে আওয়ামী লীগ আয়োজিত ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেয় পালিয়ে আসা পরিববারগুলো।
এছাড়াও আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা অংশ নেয় মানববন্ধনে। জেলার রোয়াংছড়ি উপজেলার তারাছ ইউনিয়নের দুর্গম তালুকদার পাড়াসহ ৪টি পাড়া থেকে জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র সদস্য ও সমর্থকদের দেয়া হত্যার হুমকিরমুখে গত ৫ দিন ধরেই জেলা সদরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেল এবং স্বজনদের ঘরে অবস্থান করছেন এসব পরিবারের সদস্যরা।
জীবননাশের হুমকির মুখে থাকা মারমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের নানা বয়সী লোকজন ৫ জুলাই সন্ধ্যায় রোয়াংছড়ি উপজেলার দুর্গম তারাছা ইউনিয়নের তালুকদার পাড়া এলাকায় অবৈধভাবে সংগ্রহ করা চাঁদার টাকার ভাগাভাগির ঘটনা নিয়ে জনসংহতি সমিতির চাঁদাবাজ বিমল চাকমা ও উগ্য চাকমার গ্রুপের মধ্যে মারামারি হয়। এক পর্যায়ে বিমল চাকমা গুরুতর আহত হলে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এঘটনার জন্য স্থানীয় পাড়াবাসীকে অহেতুক দায়ী করা হয় এবং পরবর্তীতে পাড়াবাসীকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। তবে জেলা আওয়ামী লীগ এসব পরিবারকে মানবিক সহায়তা প্রদান করছেন বলে জানিয়েছেন দলের জেলা কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ও পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য লক্ষীপদ দাস।
এদিকে বান্দরবান সদর উপজেলার জামছড়িমুখ পাড়া থেকে সাবেক ইউপি সদস্যা আওয়ামী লীগ নেতা মংপু মারমাকে গত ১৩ জুন অপহরণের পর সদর থানায় দায়েরকৃত মামলার বাদীসহ তার স্বজনদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে।
জনসংহতি সমিতির সশস্ত্র সদস্যদের হুমকির মুখে সেই জামছড়িমুখ এলাকা থেকেও প্রায় ৫টি পরিবারের সদস্যরা গত এক সপ্তাহ আগেই জেলা সদরে নিরাপদস্থানে সরে আসতে বাধ্য হন। রোববার সকালে সন্ত্রাসীদের হত্যার হুমকির মুখে জেলা সদরে আশ্রিত শতাধিক পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের জীবনের নিরাপত্তার দাবিতে ঘন্টা ব্যাপী এক মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেন।
মানববন্ধন শেষে সন্ত্রাসীদের ভয়ে পালিয়ে আসা পাহাড়িরা জেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি দিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা সভায় পাহাড়ে শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জোরালো দাবী উঠে। মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হ্লাথেয়াই হ্রী, তারাছা ইউপি চেয়ারম্যান উথোয়াই মারমা এবং মহিলা কুহালং ইউপির নারী সদস্যা আনুমা মারমা।