পদ্মা সেতু-মেট্রোরেল নিয়ে সংশয়ের কারণ নেই : কাদের
আনিসুর রহমান তপন : গুলশানে জঙ্গি হামলায় বেশ কয়েকজন বিদেশি নাগরিক হত্যার ঘটনা ঘটলেও পদ্মা সেতু, মেট্রোরেলসহ বড় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন নিয়ে কোনো সংশয় নেই। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে ঈদে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের গৃহীত পরিবহন ও মহাসড়ক ব্যবস্থাপনার সার্বিক বিষয়াদি পর্যালোচনা সভায় এ কথা বলেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
সেতুমন্ত্রী বলেন, কোনো প্রকল্পের কাজই বন্ধ নেই। যারা মারা গেছেন তারা মেট্রোরেল-১ ও ৫ এর ফিজিবিলিটি স্টাডির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকায় দেশি-বিদেশি পরামর্শকরা কাজ করছে। সেখানেও কোনো কাজ বন্ধ নেই। শনিবার পর্যন্ত পদ্মা সেতু প্রকল্পের মূল কাজের ৩৬ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। সেতুর ১৮টি পাইলের কাজ শেষ হয়ে গেছে।
মেট্রোরেলের (এমআরটি-৬) কাজ বন্ধ নেই জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, মেট্রোরেল-১ ও ৫ এর কাজও যথারীতি শুরু হবে। আহত ওতানাবে হাসপাতালের বেড থেকে জানিয়েছেন তিনিই আবার আসবেন। তাই বিদেশি সহায়তা নির্ভর প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হবে না এমন আশঙ্কা বা সংশয়ের কোনো কারণ নেই।
মন্ত্রী বলেন, গুলশান ও শোলাকিয়ার ঘটনা আমরা আঘাত পেয়েছি কিন্তু ভেঙে পড়িনি। আমরা আবার ঘুরে দাঁড়াব।
ইতোমধ্যে পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল রুট-৬, রুট-১ এবং রুট-৫সহ অন্যান্য প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকল বিদেশি নাগরিকের নিরাপত্তার বিষয়টি সরকার অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
এদিকে ঈদুল ফিতরে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের গৃহীত পরিবহন ও মহাসড়ক ব্যবস্থাপনার সার্বিক বিষয়াদি সম্পর্কে ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানান, আগামী ঈদুল আযহা পর্যন্ত সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের বিদেশ যাত্রাসহ সব ধরনের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
গত এক বছরে একদিনও ছুটি নেননি জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, আমি মেট্রোরেলের কাজের জন্য জাইকার সঙ্গে বৈঠক করতে জাপান গিয়েছি। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজের ঠিকাদারের সঙ্গে আলোচনা করতে ব্যাংকক গিয়েছি। ম্যানিলায় গিয়েছি উন্নয়ন অংশীদার এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)’র সঙ্গে চুক্তি করতে। গত ৭ বছরে যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্রে যাইনি।
ঈদে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানজটের জন্য কর্মকর্তাদের গাফিলতিকে দোষারোপ করে মন্ত্রী বলেন, এতো টাকা খরচ করে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক চার লেন বানিয়ে কী লাভ হয়েছে? একটু বৃষ্টি হলেই চার লেন খানাখন্দকে ভরে যায়।
এছাড়াও ঈদে গার্মেন্টস মালিকরা ৪ ও ৫ জুলাই একসঙ্গে সব গার্মেন্টস ছুটি দিয়ে রাস্তায় জনজট সৃষ্টি করেছিল। ট্রাক মালিকদের সমালোচনা করে মন্ত্রী বলেন, তারাও কথা না রেখে ঈদে রাস্তায় ট্রাক ও লরি চালিয়ে যানজট সৃষ্টি করেছেন। তবে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ছাড়া সারাদেশের অন্য সড়ক-মহাসড়কে ঈদে যান চলাচল স্বাভাবিক ছিল বলেও দাবি করেন কাদের।
এ সময় বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম, বিআরটিসির চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান, ডিটিসিএ’র নির্বাহী পরিচালক মো. কায়কোবাদ হোসেন, সওজ’র প্রধান প্রকৌশলী ইবনে আলম হাসান, ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. মোফাজ্জেল হোসেনসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সম্পাদনা : উম্মুল ওয়ারা সুইটি