গাছের সঙ্গে বেঁধে স্ত্রী নির্যাতন খবর প্রচারের পর গ্রেফতার ২
রফিকুল ইসলাম, গাইবান্ধা : স্ত্রীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনের খবর ছাপা হওয়ার পর নড়েচড়ে বসেছে গাইবান্ধার পুলিশ। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পুলিশ নির্যাতনের শিকার নারীকে উদ্ধার করেছে। দুই নির্যাতনকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী ও গ্রামবাসী জানায়, গাইবান্ধা সদর উপজেলার মধ্য ফলিয়া গ্রামের বাসিন্দা আতিকুল্লাহ সরকারের মেয়ে আতিয়া বেগম। ১০ বছর আগে তার বিয়ে হয় একই গ্রামের মোজা মিস্ত্রির ছেলে ফারুক হোসেনের সঙ্গে। বিয়ের সময় আতিয়ার বাবা তার মেয়ের সুখের কথা ভেবে যৌতুক হিসাবে জামাই ফারুককে ৮০ হাজার টাকা দেন। আরও ২০ হাজার দেওয়ার ইচ্ছা ছিল তার। ওই ২০ হাজার টাকা আর দেওয়া হয়নি। ফারুক মিস্ত্রির কাজ করেন। সংসার মোটামুটি চলে। তাদের সংসারে ভাতের অভাব ছিল না। সুখেই কাটছিল তাদের সংসার। ১০ বছর সংসার জীবনে তাদের ২ সন্তানের জন্ম হয়। সন্তান হওয়ার পর থেকেই ফারুকের সঙ্গে আতিয়ার যৌতুকের বাকি ২০ হাজার টাকা পাওনা নিয়ে প্রায়ই কথাকাটাকাটি হতো।
একপর্যায়ে ২০১৩ সালে ফারুক স্ত্রী আতিয়া ও তার দুই সন্তানকে রেখে কাজের কথা বলে চলে যান। দীর্ঘদিন প্রতীক্ষার পর ২০১৫ সালে আতিয়া তার বাবার সংসারে চলে যায়। গেল রমজান মাসে আতিয়া শুনতে পায় যে তার স্বামী ফারুক বাড়িতে এসেছে। তাই আতিয়া তার দুই সন্তানকে নিয়ে পিতার বাড়ি থেকে শনিবার স্বামী ফারুকের বাড়িতে যায়। তাকে দেখেই তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে স্বামী ফারুকসহ শ্বশুর বাড়ির লোকজন। তারা যৌতুকের টাকা নিয়ে এসেছে কিনা জানতে চায়। কিন্তু আতিয়ার না শব্দ শুনে তারা ক্ষেপে যায়। তারপর দেবর সঞ্জু, সুমন, আব্দুর রশিদসহ বাড়ির লোকজন তাকে ধরে রশি দিয়ে বেঁধে টেনেহিঁচড়ে প্রকাশ্যে বাড়ির পাশে নিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। তাকে বেধড়ক মারপিট করে। মারপিটে তার অবস্থার অবনতি হলে শনিবার সন্ধ্যায় নবনির্বাচিত ইউপি মেম্বার বাচ্চু মিয়া লোকজন নিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। এ ঘটনা দৈনিক পত্রিকায় প্রচারের পর পুলিশের টনক নড়ে। তারা জরুরিভাবে নির্যাতিত গৃহবধূ আতিয়া বেগমকে উদ্ধার করে গাইবান্ধা আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করে।
গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মেহেদী হাসান জানান, ঘটনা জানার পর রাত ১০টার দিকে পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার করে জরুরিভাবে অভিযান চালিয়ে নির্যাতনকারী স্বামী ফারুক হোসেন, ভাসুর জাহিদ হোসেনকে গ্রেফতার করে। এ ব্যাপারে ৬ জনের বিরুদ্ধে গাইবান্ধা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। সম্পাদনা : প্রিয়াংকা