জাপানের উচ্চকক্ষ নির্বাচনে ক্ষমতাসীনরা জয়ী
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : জাপানের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষের নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের নেতৃত্বাধীন দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। সংবিধান প্রণয়ন ও সংশোধন করার ক্ষমতা দেখভালের দায়িত্বে থাকা দল উচ্চকক্ষের এ নির্বাচনের মধ্যদিয়ে প্রথমবারের মতো সংসদে একচেটিয়া অবস্থানে গেল। আর এর মধ্যদিয়ে ‘আবেতত্ত্ব’ বাস্তবায়নের জন্য নাগরিক রায় পেলেন শিনজো আবে। বিডিনিউজ
রোববার সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫ টা পর্যন্ত) জাপানের ৪৫টি প্রদেশে একযোগে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ভোট শেষে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (রাত ৮টা ৪৫ মিনিট) এ ভোটে প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) জোট উচ্চকক্ষের ২৪২ আসনের মধ্যে তারা পেয়েছেন ১৪৪ টি আর বিরোধী শিবিরের দখলে রয়েছে ৭৩টি আসন। এর মধ্যে একটি আসন শূন্য রয়েছে। ভোট গণনা বাকী আছে ২৫টি আসনের।
সংসদে সংবিধান প্রণয়ন করতে গেলে দুই-তৃতীংশ ভোটের প্রয়োজন পড়ে। আর সেই অনুযায়ী ২৪২ আসনের মধ্যে ১২১ আসন যে দল পাবে তাদের মতামতই প্রাধান্য পাবে। এরই মধ্যে শিনজো আবের দল ১৪৪ আসন পেয়ে পার্লামেন্টে এগিয়ে গেল।
দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট জাপানের সংসদের নিম্নকক্ষের ভোট ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আর ওই ভোটে শিনজো আবে নির্বাচিত হন।
নির্বাচন কমিশন থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, এবারের উচ্চকক্ষ নির্বাচনে ২৪২ আসনের বিপরীতে ৩৮৯ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আগে কেবল মাত্র ২০ বছর বয়সীরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলেও এবারই প্রথম ১৮ বছরের নাগরিকরা ভোট দিয়েছে। সংবিধানের পরোক্ষ মতামত দেওয়ার এই বিধান জাপানিদের স্বাধীনতার একটি স্ফূরণ বলে সরকারের পক্ষ থেকে আগেই বলা হয়েছিল।
উচ্চকক্ষের ভোটে শিনজো আবের এলডিপি পেয়েছে ১১০টি আসন। এদের শরিক দল কুমেতো (কেএম) পেয়েছে ১৮ টি, ইনসিয়েটিভ ফর ওসাকা (আইএফও) ৯, দ্য পার্টি অব জাপানিজ কোকরো (পিজেকে) ৩, স্বতন্ত্র (আএনডি) ৪ আসন পেয়েছে।
অন্যদিকে, প্রধান বিরোধীদল ডেমোক্রেটিক পার্টি (ডিপি) নেতৃত্বাধীন দল ৭৩টি আসন পেয়েছে। এছাড়া আরও বাকী আছে ২৫ টি আসন।
উচ্চকক্ষের এই নির্বাচন প্রতি ৩ বছর পর পর হয়ে থাকে। সর্বশেষ ২০১৩ সালের ভোটে শিনজো আবের দল পেয়েছে ১১৬টি যা সংখ্যাগরিষ্ঠতার চেয়ে ৫ আসন কম ছিল। আর আসন কম থাকায় শিনজো আবের বেশ ধকল সহ্য করতে হয়। গত বছর সংবিধানে ‘নিরাপত্তা বিল’ পাসের সময় বিরোধীদলের সাংসদের সঙ্গে সরকারি দলের সাংসদের হাতাহাতি পর্যন্ত ঘটেছিল।
শিনজো আবের সামনে বড় চালেঞ্জে থাকা আবেনোমিক্স বা আবেতত্ত্ব যা দেশটির অর্থনীতিকে আরও বেশি চাঙ্গা করবে বলে আবের পক্ষ থেকে প্রচারণা চালানো হচ্ছিল। মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট বৃদ্ধির জন্য চলতি বছর পূর্ব নির্ধারিত কথা থাকলেও সম্প্রতি বিরোধীদলের বাধায় প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে তা থেকে পিছু হটে।
উচ্চকক্ষের এই ভোটের মাধ্যমে শিনজো আবের সামনে থেকে সকল বাধা দূর হল বলে বিশ্লেষকরা মনে করছে। সম্পাদনা : ইমরুল শাহেদ