রোহানের লাশ নিয়ে ধোঁয়াশা দূর হয়নি এখনও
রিকু আমির : রোহান ইবনে ইমতিয়াজের লাশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছেই আছে- এমন তথ্য রোহানের পরিবারকে জানিয়েছে পুলিশ। তবে এখন পর্যন্ত সরাসরি লাশ বা লাশের ছবি দেখে শনাক্তের সুযোগ পায়নি রোহানের পরিবার। তার একজন নিকটাত্মীয় এ প্রতিবেদকের কাছে এমন কথাই জানিয়েছেন।
এসব বিষয়ে কথা বলতে গতকাল সোমবার দুপুরে লালমাটিয়ায় যাওয়া হয় রোহানের বাসায়। রোহানের বাবা ইমতিয়াজ বাবুল বাসায় আছেন প্রথমে বাড়ির কেয়ারটেকার নুরু মিয়া এ প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করেন। রোহানের বাসা থেকে ঘুরে এসে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, স্যারের বাসায় যাওয়া নিষেধ, তারা অসুস্থ, কেউ নাই।
এর কিছুক্ষণের মধ্যে লালমাটিয়াতেই সাক্ষাৎ পাওয়া যায় রোহানের একজন নিকটাত্মীয়ের। নাম না প্রকাশের শর্তে তিনি জানান, ছেলের কর্মকা-ে ইমতিয়াজ বাবুল ও তার স্ত্রী ভীষণ ভেঙে পড়েছেন। মানসিকভাবে তারা এখনও প্রচ- বিপর্যস্ত আছেন। বাইরে কোথাও যান না, কারও সঙ্গে দেখা করেন না, কথাও বলেন না। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও বাইরের কারও সঙ্গে কথা বলায় নিষেধাজ্ঞা আছে।
গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলার পর সাইট ইন্টেলিজেন্স হামলাকারী হিসাবে যে পাঁচজনের ছবি প্রকাশ করেছিল, সে পাঁচজনের একজন রোহান ইমতিয়াজ বলে শনাক্ত হয় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে। অপারেশন থান্ডার বোল্টে নিহত যে পাঁচজনের লাশ পুলিশ প্রকাশ করেছিল, সে পাঁচ জনের একজনের লাশ ছিল রোহানের- এমনটাই জানিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু টেলিভিশনে প্রচারিত সংবাদ ও ছবি দেখে সে লাশের দাবিদার হয়ে আসেন দুই নারী। তাদের তথ্য অনুযায়ী- এই ব্যক্তি আর্টিজানের শেফ সাইফুল তালুকদার। এ দুজন নারী সাইফুলের বোন। জানানো হয়- সাইফুলের বাড়ি শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার কলুকাঠি গ্রামে।
মূলত এরপরই রোহানকে নিয়ে তুমুল আলোচনা শুরু হয়। প্রশ্ন উঠে- তবে রোহানের লাশ কোথায়? নাকি ঘটনাস্থল থেকে সে পালিয়ে গিয়েছে? এখন পর্যন্ত পুলিশ রোহানের লাশের ছবি প্রকাশ না করায় সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। বারবার পুলিশ এক কথাই বলছে- রোহানের লাশ আছে। এর উপর ভিত্তি করেই বসে আছে রোহানের পরিবার ও অন্য স্বজনরা।
পরিবারের সদস্যরা রোহানের লাশ আনতে যাবে কি-না, জানতে চাইলে রোহানের সেই নিকটাত্মীয় বলেন, ঘটনাটি নিয়ে রোহানের পরিবার খুবই বিব্রত। এখনও তারা মুখ ফুটে কিছু বলেনি। আর সরাসরি লাশ বা লাশের ছবিও তো এখনও স্বচক্ষে দেখতে পারেনি রোহানের পরিবার। এ অবস্থায় বলা মুস্কিল, পরিবারের সদস্যরা রোহানের লাশ আনতে যাবে কি-না।
পুলিশও রোহানের লাশ নিয়ে বিস্তারিত কথা বলতে রাজি নয়। তদন্ত সংশ্লিষ্ট একজন বলেন, লাশ আছে, সময় হলেই রোহানের পরিবারকে ডাকা হবে। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম