নিখোঁজ সন্তান তাজউদ্দিনের ফেরার অপেক্ষায় মা
জহিরুল ইসলাম শিবলু, লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : নিখোঁজ সন্তান তাজউদ্দিনের ফেরার অপেক্ষায় পথ চেয়ে বসে আছেন তার মা। এটিএম তাজউদ্দিন ওরফে কাউছার অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক। সর্বশেষ ২০১৩ সালে অসুস্থ বাবাকে দেখতে দেশে আসেন। এরপর মাঝেমধ্যে অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন দিয়ে মায়ের খোঁজ-খবর নিতেন। একপর্যায়ে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেন তিনি। বাড়িতে টাকা পাঠানোও বন্ধ করে দেন।
সম্প্রতি গুলশানের ক্যাফেতে জঙ্গি হামলার পর গণমাধ্যমে প্রকাশিত নিখোঁজ ১০ জনের মধ্যে তাজের ছবি দেখে উদ্বিগ্ন হন লক্ষ্মীপুরের পৌর শহরের আটিয়াতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা তাজের মা তাহেরা বেগম। তাজউদ্দিনের নিখোঁজের খবর তিনি এতদিন জানতেন না। পরে তিনি শনিবার রাতে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি নং-৩২৬ (ডিজি) করেছেন। এখন একমাত্র ছেলের দেশে ফেরার অপেক্ষায় পথ চেয়ে বসে আছেন তিনি।
ঢাকায় আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (এআইইউবি) থেকে ২০০৪ সালে কম্পিউটার সায়েন্স টেকনোলজি বিভাগ থেকে (বিএসসি) স্কলারশীপ নিয়ে ২০০৬ সালে স্টুডেন্ট ভিসায় অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমান। অস্ট্রেলিয়ায় ‘দ্য নিউ সাউথওয়েলস ইউনিভার্সিটি’ থেকে মাস্টার্স শেষ করে ২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়ান একটি কোম্পানিতে সিনিয়র কনসালটেন্ট পদে চাকরি শুরু করেন।
সে সময় তিনি অস্ট্রেলিয়ায় নোভা হাসান নামে এক নব্য মুসলিম নারীকে বিয়ে করে নাগরিক হন। ২০১০ সালে তার ঘরে জন্ম নেয় ছেলে সন্তান সাদ ইবনে তাজউদ্দিন। দুবছর পর জন্ম নেয় মেয়েসন্তান মারিয়াম বিনতে তাজউদ্দিন। সর্বশেষ ২০১৩ সালে তাজ অসুস্থ বাবাকে দেখতে বাড়িতে আসেন এবং এক সপ্তাহ পর অস্ট্রেলিয়ায় চলে যান।
তাজের মা তাহেরা বেগম বলেন, এরপর থেকে সে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ কমিয়ে দেয়। একপর্যায়ে পরিবারের কাছে টাকা পাঠানোও বন্ধ করে দেয়। রমজানের কয়েকদিন আগে সে শেষবারের মতো বাড়িতে ফোন দিয়ে আমার শারীরিক খোঁজ-খবর নেয়। এখন বিভিন্ন গণমাধ্যমে তার নিখোঁজের খবর শুনছি। সে দেশে ফিরে আসুক, এটাই আমি চাই।
লক্ষ্মীপুর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. নাসিম মিয়া বলেন, বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর তাজের মা লক্ষ্মীপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এ বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম