ইসলাম বরং বেশি উদার!
আমির পারভেজ : আহমেদ কাশিম আল-ঘামাদি সাবেক শীর্ষ সৌদি ধর্মীয় পুলিশ কর্মকর্তা। সৌদি আরবের প্রচার ও অনৈতিকতা প্রতিরোধ কর্তৃপক্ষের মক্কা অংশের সাবেক প্রধান। নিজের দায়িত্বের খাতিরে অনেকের কাছে ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়ান। কারণ কেউ নামাজ না পড়লে, আপত্তিকর মনে হয় এমন পোশাক পড়লে, মেয়েরা গাড়ি চালালে এবং এধরনের বিভিন্ন ঘটনায় সৌদি নাগরিকদের আটক করায় এ নিয়ে বিড়ম্বনা ঘটে অনেক। এধরনের দায়িত্ব পালন ও তদারকি করতে করতে একসময় নিজেই নিজের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে সঠিক তথ্যের জন্য পড়াশুনা শুরু করেন। কুরআন পড়ে জানতে পারেন ইসলাম কতটা উদার নারীদের প্রতি। নিজের ভুল বুঝতে পেরে কর্মস্থল থেকে অব্যাহতি নেন।
তিনি শুরু করেন লেখালেখি। নানান সংবাদ মাধ্যমে ইসলাম কতটুকু উদার তা তুলে ধরেন। তার স্ত্রী জাওয়াহের বিনতে আল-শেখ আলী গত বছর এমবিসি টিভিতে মুখ খোলা অবস্থায় বা নিকাব ছাড়াই উপস্থিত হন। আর শেখ আহমেদ আল-গামেদীও তার সাথে উপস্থিত ছিলেন। তিনি টিভি সাক্ষাৎকারে জানান, মহিলারা তাদের মুখ প্রকাশ না ঢেকেও চলাফেরা করতে পারেন যা দোষের কিছু নয় এবং প্রয়োজনে তারা সামান্য মেকআপ করতে পারে বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন।
ঘামাদি বলেন, মেয়েরা অবশ্যই সাজগোজ করতে পারেন। তবে পরিমিতিবোধের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রয়োজনবোধে হালকা মেকআপ করতে পারেন। মেয়েরা অবশ্যই গায়ের রং ও পোশাকের সাথে মানানসই হালকা রঙের লিপস্টিক ব্যবহার করতে পারেন। কারণ এটা তাদের সাজগোজের অংশ। আর কিছু লিপস্টিক ও লিপজেল ঠোঁটের জন্য উপকারী। প্রশাধনী ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় সেজেগুজে মেয়েরা চলাফেরা করবে। তাতে দোষের কিছু নেই।
তিনি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে বলেন, সৌদিরা সেই ধর্ম চর্চা করে যা তাদের সংস্কৃতি ও বিশ্বাসের সাথে মিশে গেছে। আর এসব বাধ্যবাধকতা চালিয়ে দেওয়া হচ্ছে ইসলামের নামে। কিন্তু ইসলাম বরং অনেক বেশি উদার। প্রার্থনার জন্য দোকানপাট বন্ধ করার কোনো প্রয়োজন নেই যা সৌদি আরবে করা হয়।
ঘামাদি উদাহরণ টেনে বলেন, সৌদিতে নারীদের গাড়ি চালানো নিষিদ্ধ। কিন্তু নবিযুগে নারীরা উটের উপর চড়ত, যা বর্তমানে গাড়িতে বসে ড্রাইভিং করার চেয়ে বেশি আকর্ষণীয় ছিল। যদিও এখনও সৌদি নারীরা গাড়ি চালানোর অনুমতি পায়নি। সম্পাদনা : রাশিদ রিয়াজ