
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে জিহাদি সংগ্রহে আইএসের সংবাদপত্র প্রকাশ
ইমরুল শাহেদ : দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া থেকে জিহাদি সংগ্রহের জন্য ইসলামিক স্টেট আল-ফাতিহিন নামে একটি সংবাদপত্র প্রকাশনার কাজ শুরু করেছে। মালয় ভাষায় প্রকাশিত এই সংবাদপত্রটি মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনাই, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণাঞ্চলীয় থাইল্যান্ড ও ফিলিপাইনের দক্ষিণাঞ্চলে বিতরণও শুরু করেছে। এ খবর দিয়েছে মালয় অনলাইন।
দ্য রাজারতনম স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ (আরএসআইএস) উল্লেখ করেছে, আল-ফাতিহিনের প্রথম সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে ২০ জুন। তখন ছিল রমজান মাস। আরএসআইএসের গবেষক জেস্মিন্দার সিং এবং মুহাম্মদ বিন জানি বলেছেন, ২০ পৃষ্ঠার এই সংস্করণটিতে রমজানের তাৎপর্য, জিহাদ এবং রোজা রাখার ফজিলত নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। মালয় ভাষায় প্রকাশিত সংবাদপত্রটি সম্পর্কে সিং এবং জানি বলেন, ‘বৃহত্তর মালয় ভাষা ও তার পরিচিতি ব্যবহার করে জিহাদিদের সমবেত করায় আইএসের আদর্শ ও প্রচেষ্টার প্রচারণাই এই সংবাদপত্রের মুখ্য কাজ। আল-ফাতিহিনের মাধ্যমে তারা ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের জিহাদি গ্রুপগুলোকে একত্র করার চেষ্টা করছে এবং আবু বকর আল-বাগদাদীর প্রতি আনুগত্য প্রকাশের আহ্বান জানাচ্ছে।’
সংবাদপত্রটি প্রকাশিত হওয়ার দুই দিন পর আইএস সন্ত্রাসীরা ফিলিপাইনকে তাদের খিলাফত দাবি করে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার জঙ্গিদের ফিলিপাইন সফর করার আহ্বান জানিয়ে একটি ভিডিও প্রচার শুরু করে। বিশেষ করে কেউ যদি সিরিয়া যেতে না পারেন। দ্য স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০ মিনিটের এই ভিডিওটিতে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের জিহাদিদের ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে আইএসের প্রতি সমর্থন জানাতেও সুযোগ দেওয়া হয়েছে।
ইতোমধ্যে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ১১ জুলাই সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, যদি কাউকে মালয় ভাষায় প্রকাশিত আইএসআইএসের এই সংবাদপত্রটিকে প্রকাশ বা পরিবেশনা করতে দেখা যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপমন্ত্রী দাতুক নূর কাজলান মোহাম্মদ বলেছেন, মালয়েশিয়ায় এই প্রকাশনাটি অবৈধ। যদি কেউ ধরা পড়েন তাহলে তাকে তো দ- দেওয়া হবেই এবং বলতে হবে দেশের অভ্যন্তরে কিভাবে পত্রিকাটি প্রচারিত হচ্ছে।
মোহাম্মদের উদ্ধৃতি দিয়ে মালয় অনলাইনে বলা হয়েছে, ‘এই পত্রিকাটির আমদানি একেবারেই অসম্ভব। রয়েল মালয়েশিয়া কাস্টমস দেশের ভিতরে আসা সব পত্র-পত্রিকা ভালোভাবে খতিয়ে দেখে। তবে আমরা খতিয়ে দেখছি পত্রিকাটির মুদ্রিত সংস্করণ বিতরণ হচ্ছে, নাকি এটা ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করে নেওয়া হচ্ছে।’
আরএসআইএস গবেষকরা লক্ষ্য করেছেন, আল-ফাতিহিনের প্রথম তিন পৃষ্ঠায় আল কায়েদা নেতা আবু হামজা আল-মুহাজিরের উপদেশে ঠাসা। যাকে আরবিতে বলা হয় ‘দ্য কনকুয়ার্স’। সেখানে বলা হয়েছে জিহাদিরা কিভাবে তাদের জিহাদি কর্মকা- চালিয়ে যাবেন, শহীদ হলে কি হবে এবং কিভাবে নাস্তিকদের শায়েস্তা করতে হবে ইত্যাদি। সংবাদপত্রটির ট্যাগলাইনে বলা হয়েছে, ‘ইসলামিক স্টেটে আগত মালয় ভাষী অভিবাসীদের জন্য।’
সিং এবং জানি তাদের প্রতিবেদনে সংবাদপত্রটি সম্পর্কে বলেছেন, ‘আল-ফাতিহিনের ট্যাগলাইন থেকে বুঝা যায়, ভাষা, বর্ণ বা জাতিগত ভিন্নতা বা পার্থক্য কোনো বিষয় নয়, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সব জিহাদির একটি কমন লগো হলো, সব মালয় ভাষী জিহাদি একজন হয়ে কাজ করবে।’ সম্পাদনা : সুমন ইসলাম
