আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ক্রমেই মধ্যপ্রাচ্যের নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। গত দেড় বছরে ইরাক ও সিরিয়ায় নিজেদের নিয়ন্ত্রণে থাকা এক-চতুর্থাংশ এলাকা হারিয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠীটি। আর মধ্যপ্রাচ্যে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ক্রমে ইউরোপ ও এশিয়ায় হামলা বাড়াচ্ছে জঙ্গি সংগঠনটি। এনটিভি
যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডোভিত্তিক গবেষণা সংস্থা ইনফরমেশন হ্যান্ডলিং সার্ভিসেসের (আইএইচএস) যুক্তরাজ্যের সংবাদপত্র ইনডিপেনডেন্ট বলেছে, বিশাল এলাকা হারিয়ে এ জঙ্গিগোষ্ঠী এখন বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুর ওপর হামলা বাড়িয়ে দিতে পারে। মাত্র কয়েক বছর আগে মধ্যপ্রাচ্যে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে আইএস। এই কয়েক বছরের মধ্যে এই জঙ্গিগোষ্ঠী ইরাক ও সিরিয়ার বড় এলাকা দখল করে ইসলামী খেলাফত প্রতিষ্ঠার ঘোষণা দেয়। ২০১৫ সালের জানুয়ারিতেও আইএস ইরাক ও সিরিয়ার ৯০ হাজার ৮০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছিল, যা এ বছরের জুনে কমে ৬৮ হাজার ৩০০ বর্গকিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে বলে আইএইচএস জানিয়েছে।
গবেষণা সংস্থাটির হিসাব অনুযায়ী, শুধু ২০১৬ সালের প্রথম ছয় মাসেই ১২ শতাংশ এলাকার দখল হারিয়েছে আইএস। কয়েক মাসে ইরাকের সরকারি বাহিনীর অভিযানে আইএস মসুলসহ বেশ কয়েকটি শহরের নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে বাধ্য হয়।
কয়েকটি শহরের দখল হারানোর পর সম্প্রতি ইরাকের রাজধানী বাগদাদে দুদফা জঙ্গি হামলা চালায় আইএস, তাতে প্রায় ৩০০ জন মারা যান। তবে গত ছয় মাসের হিসাবে দেখা যায়, ক্রমে মধ্যপ্রাচ্যের নিয়ন্ত্রণ হারাচ্ছে আইএস। বদলে আক্রমণের বিষয়ে পরিণত করেছে ইউরোপ ও এশিয়ার দেশগুলোকে। গত ডিসেম্বরে প্যারিসে ভয়াবহ হামলার পর সম্প্রতি তুরস্কেও কয়েক দফা হামলা চালিয়েছে আইএস। এ ছাড়া পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশেও আইএসের আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে।
সংঘাতের ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণকারী আইএইচএসের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক কলাম্ব স্ট্র্যাক বলেন, যেহেতু আইএসের খেলাফতে চিড় ধরেছে, তা স্পষ্ট করেছে যে তাদের রাষ্ট্র গঠনের প্রকল্পটি ব্যর্থ হচ্ছে। ফলে এখন তারা অন্য জঙ্গি সংগঠনের মতো কার্যক্রমে মনোযোগ নিবিষ্ট করতে পারে। আর তা হলে দুর্ভাগ্যজনক হলেও তাদের হামলায় ইরাক-সিরিয়ায় জানমালের ক্ষয়ক্ষতি বেড়ে যেতে পারে। এটা বিস্তৃত হতে পারে নতুন নতুন জায়গা, এশিয়া, এমনকি ইউরোপেও।