গাইবান্ধায় স্ত্রীকে নির্যাতন করে মাথার চুল কেটে দিয়েছে পুলিশ স্বামী
রফিকুল ইসলাম, গাইবান্ধা : গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাইহাট ইউনিয়নের ডোমরগাছা গ্রামে জাকিয়া সুলতানা হাসি (২৮) নামে এক গৃহবধূকে যৌতুকের দাবি ও ২য় স্ত্রীকে মেনে নেওয়ার জন্য দশদিন অন্ধকার ঘরে আটকে রেখে নির্যাতন চালিয়ে মাথার চুল কেটে নিয়েছে তার পুলিশ স্বামী আসাদ আলম প্লাবন। ওই গৃহবধূর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বিরুদ্ধেও নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন হাসি। বুধবার গাইবান্ধা হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় মহিলা ওয়ার্ডের ৩৪ নম্বর বেডে শুয়ে থেকে জাকিয়া সুলতানা বলেন, তার উপর নির্যাতনের ঘটনায় থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ সে মামলা নেয়নি। জাকিয়া সুলতানার মা জুলেখা বেগম অসুস্থ মেয়ের উপর নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে বলেন, আমরা এখন কোথায় যাব?
গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের মেঘডুমুর গ্রামের আব্দুল হাই আকন্দের মেয়ে জাকিয়া সুলতানা হাসির সঙ্গে ৭ বছর আগে ২০১০ সালে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার নাকাইহাট ইউনিয়নের ডোমরগাছা গ্রামের লাল মিয়া মন্ডলের ছেলে আসাদ আলম পাবনের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক বাবদ ৩ লাখ টাকা দিতে হয় বলে হাসির মা জুলেখা বেগম জানান। পুলিশ কনস্টেবল আসাদ আলম প্লাবন বর্তমানে ঠাকুরগাঁও জেলা পুলিশ লাইনে কর্মরত। পরশি আকতার (৫) নামে তাদের এক মেয়ে সন্তান রয়েছে।
সম্প্রতি আসাদ স্ত্রীর সম্মতি না নিয়েই দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলায় নাহিদ নামে এক মেয়েকে দ্বিতীয় বিয়ে করে। হাসি গত রমজান মাসে বাবার বাড়িতে বেড়াতে যায়। ঠাকুরগাঁও থেকে বাড়ি এসে আসাদ আলম গত ৩ জুলাই স্ত্রী হাসিকে শ্বশুর বাড়ি থেকে তার বাড়িতে নিয়ে আসে। তাকে তখন ৩ লাখ টাকা যৌতুক বাবদ প্রদান এবং দ্বিতীয় স্ত্রী নাহিদকে মেনে নিতে বলেন। কিন্তু এতে হাসি রাজি না হওয়ায় ওইদিন থেকে ১২ জুলাই পর্যন্ত একটানা ১০ দিন তাকে একটি অন্ধকার ঘরে তালাবদ্ধ করে আটকে রাখা হয়। তাকে ঠিকভাবে খাবারও দেওয়া হতো না। পুলিশ সদস্য হওয়ার কারণে প্রতিবেশীরা এ নিয়ে উচ্চবাচ্চ করতেও সাহস পেত না। বন্দি অবস্থায় রেখে আসাদসহ পরিবারের অন্যান্যরা হাসির উপর শারীরিক নির্যাতন করতো এবং তার মাথার চুলও কেটে নেয়।
গোবিন্দগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাম্মেল হক বলেন, নির্যাতনের সুনির্দিষ্ট মামলা দেওয়া হলে তা গ্রহণ করা হবে। সম্পাদনা : প্রিয়াংকা