অনুমোদনও আছে একটির! জাকির নায়েকের পিস স্কুলের অনুকরণে দেশে ২০টি স্কুল
জাফর আহমদ : জাকির নায়েকের মতাদর্শ অনুসরণ করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘পিস’ শব্দজুড়ে দিয়ে প্রায় ২০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব পেয়েছে খোদ শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠান সরকারের প্রাথমিক অনুমোদনও পেয়েছে। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো চলছে সরকারের কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়াই। এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে এতদিন খোঁজখবর না থাকলেও সাম্প্রতিক ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে সরকার। ঢাকার মালিবাগ, উত্তরা, মিরপুর ও লালমাটিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে এসব স্কুল।
ঢাকার ৪০০/বি মালিবাগ চৌধুরীপড়ায় ‘পিস স্কুল’ নামে একটি বিদ্যালয় চলছে। পিস স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামে উত্তরা ও মিরপুরে দুটি স্কুলের খোঁজ পাওয়া গেছে। উত্তরা ক্যাম্পাসের ঠিকানায় লেখা আছে- হাউজ ৫৯, রোড ৫, সেক্টর ১৩, উত্তরা মডেল টাউন। আর মিরপুর ক্যাম্পাসের ঠিকানা- প্লট ৫, রোড ২৮/ক, রূপনগর আবাসিক এলাকা। এছাড়া লালমাটিয়ার বি-ব্লকের হাউজ ৪/৯ এর ‘পিস ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের’ জুনিয়র সেকশন এবং লালমাটিয়ার বি-ব্লকের হাউজ ৫/৭ এ এই স্কুলের সিনিয়র সেকশন পরিচালিত হচ্ছে। এই একটি মাত্র প্রতিষ্ঠানই সরকারের কাছ থেকে প্রাথমিক অনুমোদন পেয়েছে। যোগাযোগ করা হলে এই স্কুলের এক কর্মকর্তা বলেন, ২০১১ সাল থেকে তারা স্কুল পরিচালনা করছেন। ইংরেজি মাধ্যমের এই স্কুলে প্লে-গ্রুপ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। তবে ডা. জাকির নায়েকের আদর্শে অনুপ্রাণিত হচ্ছে না উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানের আরবি বিভাগের সমন্বয়ক মাসুম বিল্লাহ বলেন, তাদের পরিচালিত স্কুলের পাঠ্যক্রমের কিছু অংশ সংশোধন করে বাংলাদেশ এবং বর্তমান সময়ের উপযোগী করে পাঠ্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
ঢাকাসহ সারাদেশে পিস স্কুলের নামে ২৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে বলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। সরকারের অনুমোদন ছাড়া যেসব পিস স্কুল পরিচালিত হচ্ছে সেগুলোতে আরবি, ইংরেজি ও বাংলার সমন্বয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয় বলে স্কুলগুলোর ওয়েবসাইটে দাবি করা হয়েছে। যোগাযোগের নম্বরে যোগাযোগ করলেও কেউই ফোন ধরেননি। এসব স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য স্কুলগুলোর ওয়েবসাইটে দেওয়া মোবাইল নম্বরগুলোও বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে ঢাকা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক এ টি এম মইনুল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ঢাকার লালমাটিয়ায় পিস স্কুল নামে একটি ইংরেজি মাধ্যমের স্কুলের সাময়িক নিবন্ধন দিয়েছেন তারা। পিস স্কুল নামে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন নেই। অনুমোদন ছাড়া এসব স্কুল কীভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্থাপনে কোনো ধরনের অনুমোদনের প্রয়োজন হয় না। প্রথমে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে কার্যক্রম শুরু করেন সংশ্লিষ্টরা। একটা পর্যায়ে আসার পর সরকারের কাছে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করেন। সরকার ওই প্রতিষ্ঠান সরেজমিন পরিদর্শন করে সেটাকে অনুমোদন দেওয়া, না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি