যুদ্ধাপরাধীদের নামে বরাদ্দকৃত প্লট বাতিল
বিশেষ প্রতিনিধি : গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন জানিয়েছেন, একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের নামে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) বরাদ্দকৃত প্লট বাতিল করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বেসরকারি স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের নামে বরাদ্দকৃত যেসব প্লট বা ফ্ল্যাটে ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি কাজ করছে তারা তাদের অংশ পাবে। বাকি অংশ সরকার নিয়ে নেবে।
মন্ত্রী বলেন, কোনো কোনো যুদ্ধাপরাধী, কারও নাম বলব না, সে ডেভেলপারকে দিয়েছে। ডেভেলপারের তো কোনো দোষ নেই। ডেভেলপারের অংশ ডেভেলপার নিয়ে নেবে, বাকি অংশ আমরা নিয়ে নেব।
যাদের প্লটের বরাদ্দ বাতিল হয়েছে, সেই যুদ্ধাপরাধীদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না কেন জানতে চাইলে হাসতে হাসতে মন্ত্রী বলেন, যুদ্ধাপরাধী তো অনেকেই আছে। যাদের নামে আছে সবগুলো আমরা নিয়ে নিচ্ছি। ২০০৬ সালে ‘রাষ্ট্রীয় কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ’ জামায়াত আমির মতিউর রহমান নিজামীকে প্লট দেয় রাজউক। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে গত ১০ মে নিজামীর মৃত্যুদ- কার্যকর করা হয়।
বনানীর ১৮ নম্বর সড়কের ৬০ নম্বর প্লটটি ১৯৯৫ সালে আজিজুর রহিম নামের এক ব্যক্তিকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। ২০০৬ সালের ২১ মে রাজউকের বোর্ডসভায় তা বাতিল করে পাঁচ কাঠার ওই প্লট তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী নিজামীকে দেওয়া হয়। এ নিয়ে আগের বরাদ্দগ্রহীতা পূর্ত মন্ত্রণালয়ে সচিবের কাছে অভিযোগ করলে তদন্ত শুরু হয়।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, আজিজুর রহিম ওই প্লটের বিপরীতে তিন লাখ টাকা কিস্তি পরিশোধ করার পরও তা নিজামীকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। নিজামী প্লটটি বরাদ্দ পাওয়ার পর জামায়াত নেতাদের পরিচালিত মিশন ডেভেলপার লিমিটেডের নামে আমমোক্তারনামা দেন, যা রাজউক অনুমোদিত নয়।
বনানী ঝিলপাড়ে জে ব্লকের ১৮ নম্বর সড়কের ওই বাড়ির নাম ‘মিশন নাহার’। নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ‘মিশন’ আর নিজামীর স্ত্রী শামসুন নাহার নিজামীর নাম থেকে ভবনটির এ নাম।
এর আগে গত ১৫ জুন জাতীয় সংসদে গণপূর্তমন্ত্রী বলেছিলেন, নিয়ম বহির্ভূতভাবে জামায়াতের বিভিন্ন নেতা, সাজাপ্রাপ্ত, অভিযোগে আটক চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের নামে রাজউক কর্তৃক প্লট বরাদ্দ প্রদান করা হয়ে থাকলে তা তদন্ত করে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম