জামায়াতের অবস্থান পরিষ্কারের দাবি জোট নেতাদের উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় কনভেশন চায় ২০ দল
শাহানুজ্জামান টিটু : উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জাতীয় কনভেশনের দাবি জানিয়েছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা। পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে বিএনপি জামায়াতকে বাদ না দিলে তাদের সঙ্গে কোনো ঐক্য বা আলোচনা হতে পারে না। সরকারের এই বক্তব্যের জবাবে জোটের অন্যতম শরিক দল জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান কী জানতে চান জোট নেতারা। জোট নেতা বেগম খালেদা জিয়াও সরকারের এই বক্তব্যের বিষয়ে জামায়াতকে স্পষ্ট করতে বলেছেন। গতকাল রাতে রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে জোট নেতা বেগম খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে ২০ দলীয় জোটের র্শীষ নেতাদের বৈঠকে এ দাবি জানানো হয়। বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। তবে আজ দেশের বিভিন্ন পেশাজীবী, বিশিষ্ট নাগরিক, বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বিএনপি।
র্দীঘ বিরতির পর ২০ দলীয় জোটের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, উগ্রবাদ, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। বৈঠকের শুরুতে সূচনা বক্তব্য দেন জোটের শরিক বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান। তিনিই প্রথমে জঙ্গি ও উগ্রবাদের বিরুদ্ধে বিএনপির নেতৃত্বে ঢাকায় একটি জাতীয় কনভেশন করার দাবি জানান। পরে সব শরিক দল তার বক্তব্যের সর্মথন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। বৈঠকে খালেদা জিয়ার জাতীয় ঐক্যের ডাক দেওয়াকে সকলেই সমর্থন জানান।
বৈঠক সূত্র জানায়, খালেদা জিয়ার এই আহ্বানে সরকার সাড়া না দিলে ২০ দলীয় জোটের বাইরে থাকা রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, বিশিষ্ট নাগরিকরা বিএনপির ডাকা এই কনভেশনে যোগ দেবেন। বিভাগীয় শহরে কর্মসূচির বিষয়ে খালেদা জিয়ার অনীহা রয়েছে। কারণ ঢাকার বাইরের কোনো কর্মসূচিতে সরকার সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে এমন আশঙ্কা করেছেন তিনি। একারণে এই ইস্যুতে ঢাকার মধ্যে কিছু কর্মসূচি নেওয়া হতে পারে।
সরকারের পক্ষ থেকে বার বার বলা হচ্ছে বিএনপির সঙ্গে ঐক্য হতে পারে কিন্তু জামায়াতকে বাদ দিতে হবে সরকারের এমন বক্তব্যের বিষয়টি বৈঠকের আলোচনায় উঠে আসে। এক্ষেত্রে জামায়াতের নিরব থাকাটা জোটের অন্য শরিকরা সমালোচনা করেন। শরিকরা চায় সরকারের এসব বক্তব্যের পরিষ্কার ব্যাখা দিক জামায়াত। কারণ এর আগে জামায়াত আওয়ামী লীগের সঙ্গে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ইস্যুতে আন্দোলন করেছে। তখন জামায়াত নেতারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করেছে।
জামায়তের পক্ষ থেকে এই বক্তব্যের জবাবে দলের নির্বাহী পরিষদ সদস্য আবদুল হালিম বলেন, সরকার এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বলছে। কারণ এরআগে আওয়ামী লীগ জামায়াতের সাথে বসেছে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীর সঙ্গে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার বৈঠক করেছে। ফলে তারা এখন যেটা বলছে এটা তাদের রাজনৈতিক বক্তব্য মানুষকে ধোঁকা দেওয়ার জন্য। জামায়াতের সঙ্গে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের বিন্দুমাত্র দূরত্ব হয়নি বলে জানালেন জোটের এক নেতা।
সরকারের জামায়াতের বিরুদ্ধে এই প্রচারণার ব্যাপারে বিএনপি প্রধান ও ২০ দলীয় জোট নেতা খালেদা জিয়া জামায়াতকে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করতে বলেন। তিনি বলেন, এর আগেও তো জামায়াতের সঙ্গে তারা একাধিকবার বসেছে। এসব কথা আপনারা বলেন। এরআগে তো তারা আপনাদের সঙ্গে বসেছে তাহলে এখন বসতে চাচ্ছে না কেন।
সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী