পিরোজপুরে সংখ্যালঘু প্রধান শিক্ষক লাঞ্ছিত জোরপূর্বক অব্যাহতির অভিযোগ
খেলাফত হোসেন খসরু, পিরোজপুর : নারায়ণগঞ্জের পর এবার নাজিরপুরে এক হিন্দু প্রধান শিক্ষককে জীবননাশের হুমকি দিয়ে তার পদ থেকে অব্যাহতি পত্র লিখিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে। বিদ্যালয়ের একটি চুরির ঘটনা প্রধান শিক্ষকের উপরে চাপিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে জেরপূর্বক প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে অব্যাহতি দিতে।
প্রধান শিক্ষক সন্তোষ কুমার কু-ু অভিযোগ করে জানান, মাটিভাঙ্গা ইউনিয়নের হাজি আব্দুল গণি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে ২০০৪ সাল থেকে কর্মরত আছেন। তিনি যোগদানের পর স্থানীয় আ.লীগ নেতা শাহ আলম ফরাজী একটানা ৫ বছর ওই বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে তিনি আর সভাপতি হতে না পেরে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিবিধ ষড়যন্ত্র শুরু করেন। রমজান উপলক্ষে গত জুন মাসের ৬ তারিখ থেকে জুলাই মাসের ৯ তারিখ পর্যন্ত বিদ্যালয় ছুটি ঘোষণা করা হয়। বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় ওই প্রধান শিক্ষক পার্শ্ববর্তী কাউখালী উপজেলা সদরের বাসায় অবস্থান করছিলেন।
বিদ্যালয় বন্ধ থাকার সুযোগে গত ২৫ জুন দিবাগত রাতে কে বা কারা বিদ্যালয়ের শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের তালা ভেঙে ৮টি ল্যাপটপ চুরি করে। উক্ত চুরি বিষয় নিয়ে গত রোববার দুপুরে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে পরিচালনা পরিষদের বর্তমান সভাপতি সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে স্থানীয়দের নিয়ে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা চলাকালে উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ আলম ফরাজীর নেতৃত্বে ওই ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি বখতিয়ার হোসেন ও বর্তমান সভাপতি শাহ নিয়াজ ফরাজী হিরুসহ ৭/৮ জন বহিরাগত যুবক সভাকক্ষে প্রবেশ করে প্রধান শিক্ষককে বিদ্যালয়ের ল্যাপটপ চুরির ঘটনায় অভিযুক্ত করে চোর অপবাদ দেয়। এ সময় তারা বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতিসহ ওই শিক্ষককে লাঞ্ছিত করে জোরপূর্বক তার কাছ থেকে বিদ্যালয়ের প্যাডে অব্যাহতি পত্র লিখিয়ে নেয়। এ বিষয়ে নাজিরপুর থানায় সন্তোষ কুমার কুন্ডুর ছেলে অ্যাডভোকেট সজীব কুমার কুন্ডু একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে স্থানীয় সুশীল সমাজ, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
আ.লীগ নেতা শাহ আলম ফরাজী বলেন, প্রধান শিক্ষক চুরির দায় স্বীকার করে এক মাসের মধ্যে মালামাল ফেরত দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে। সেই শর্তে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া যখন তিনি অব্যাহতিপত্র লিখে দেন তখন সেখানে আমি ছিলাম না।
বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, চুরির বিষয়টি তদন্ত ছাড়া কাউকে দায়ী করা যাবে না। তবে অব্যাহতি পত্রে তিনি পারিবারিক সমস্যার কারণ উল্লেখ করেছেন। সম্পাদনা : প্রিয়াংকা