‘আল্লাহু আকবার’ বলে মানুষ হত্যা জিহাদ নয়: শফী
ডেস্ক রিপোর্ট : হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফী বলেছেন, কোনো মদ্যপ ‘আল্লাহু আকবার’ বলে মদ পান করলে সেটাকে যেমন কেউ ইসলামি মদ বলবে না, তেমনি কোনো সন্ত্রাসী ইসলামের নামে ‘আল্লাহু আকবার’ বলে মানুষ হত্যার মতো জঘন্য কাজ করলে, সেটাকে ‘জিহাদ’ ভাবার অবকাশ নেই। তিনি বলেন, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, কাউকে বিনা কারণে হত্যা ও সমাজে ভীতি তৈরির নাম কখনোই জিহাদ নয়; বরং ইসলামের জিহাদ হচ্ছে অন্যায় আগ্রাসন ও সন্ত্রাস- নৈরাজ্য দমনের জন্য। জিহাদের এই প্রকৃত ব্যাখ্যা সুন্দরভাবে তুলে ধরতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে শাহ আহমদ শফী এসব কথা বলেন।
গুলশান, শোলাকিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী হামলা এবং নৃশংস হত্যাকা-ের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হেফাজতে ইসলামের আমির। বলেছেন, শক্তিশালী কোনো পক্ষের ইন্ধন ছাড়া বিচ্ছিন্ন গুটিকয়েক অপরাধীর পক্ষে এমন সন্ত্রাসী কর্মকা- পরিচালনা করা অসম্ভব।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বেছে বেছে বিদেশি নাগরিক, অমুসলিম ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের হত্যা, হত্যার হুমকি, মসজিদ, মন্দির ও গির্জায় হামলার প্রচেষ্টা চরম উদ্বেগজনক। সঠিক ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এসব সন্ত্রাসী কর্মকা-ের পেছনের ইন্ধনদাতাদের খুঁজে বের করা জরুরি।
শান্তর ধর্ম ইসলামের সঠিক শিক্ষা সর্বত্র পৌঁছে দিতে দেশের আলেম সমাজকে আরও সক্রিয় ভূমিকার রাখতে এবং এ কাজে আলেমদের সহযোগিতা দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান শাহ আহমদ শফী। একই সঙ্গে ইমাম-খতিবদের খুৎবা নজরদারি করতে সরকার ও প্রশাসন যে উদ্যোগ নিয়েছে, তারও বিরোধিতা করেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও জাতীয় ঐক্যকে ধ্বংস করার জন্য বিভিন্ন অপশক্তি গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা দেশ থেকে ইসলামকে উচ্ছেদ করে আধিপত্য ও শোষণের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এ কাজে তারা উচ্চশিক্ষিত সরলমনা কিছু মুসলিম যুবককে ইসলামের ভুল ব্যাখ্যায় প্রভাবিত করে ব্যবহার করতে সক্ষম হচ্ছে বলে ধারণা করা যাচ্ছে।
যেকোনো সন্ত্রাসী কর্মকা-ের তদন্তের আগে ‘দোষারোপের’ রাজনীতি বন্ধ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধী ও মদদদাতাদের বিচারের আওতায় আনতে সাহায্য করতে আহমদ শফী সবার প্রতি আহ্বান জানান। তিনি প্রশ্ন তোলেন, রাজনৈতিক বিবাদ ও অসন্তোষ জিঁইয়ে রেখে দেশে স্থিতিশীলতা কীভাবে প্রতিষ্ঠা হবে? রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য ক্ষমতাসীন দলেরই উদ্যোগ নেওয়ার দায়-দায়িত্ব বেশি। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম