টার্গেট বাংলাদেশ
মুহম্মদ ইমাম হোসেন
প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে তার কঠোর মনোভাব ও একই সঙ্গে সামাজিক প্রতিরোধের কথা উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, পবিত্র রমজান মাসে একজন মুসলিম নামাজ বাদ দিয়ে মানুষ খুন করতে পারে না। এদের ধর্ম ইসলাম হতে পারে না। এদের ধর্ম সন্ত্রাস। এছাড়া সন্তানদের বিপদগামী পথ থেকে বাঁচাতে অভিভাবকদের আরও যতœবান হতে তিনি আহ্বান জানান।
পৃথিবীর যেকোনো দেশে যখনই জাতীয় দুর্যোগের সম্মুখীন হয় তখন সমগ্র জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে সে পরিস্থিতি মোকাবিলা করে। অথচ বাংলাদেশের মানুষ যখন গুলশানের নারকীয় হত্যাযজ্ঞে উদ্বিগ্ন তখন দেশের সাবেক বিরোধীদলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া প্রথমে তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা দাবি করলেন। তারপর তিনি বলে বসলেন, সরকারের দমন-পীড়ন ও জুলুম-নির্যাতনের ফলে জঙ্গি হামলা সংগঠিত হচ্ছে এবং অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনই এ থেকে উত্তরণের উপায়। যদিও তিনি পরবর্তীতে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন। যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় ঐক্যের ডাক দেওয়ায় অনেকেই এর আন্তরিকতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। অনেকের মনে জোর সন্দেহ বাংলাদেশ কি তথাকথিত সন্ত্রাসবাদবিরোধী যুদ্ধের পরবর্তী টার্গেট? বাংলাদেশ কি পরিণত হবে পরবর্তী আফগানিস্তান, ইরাক কিংবা সিরিয়ায়? এই শান্তি ভূমিতে কি বইবে রক্তগঙ্গা?
সাম্প্রতিক সময়ের গুপ্তহত্যা ও রাজধানীর গুলশানে জিম্মি করে মানুষ খুনসহ একের পর এক ঘটে চলছে দেশ, মানবতা ও ধর্মবিরোধী অপকর্ম। এই উন্মাদ খুনিরা তাদের আদর্শে ১০০ ভাগ শ্রদ্ধাশীল। অথচ আমাদের আদর্শে কতভাগ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ আমরা? এই ষড়যন্ত্রের পালক একের পর এক ভারী হচ্ছেÑ কারও ক্ষমতার হিসেব, কারও যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর হিসেব, কারও আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক হিসেব। এই দানবীয় কাজ রুখতে শুধু সরকার নয় সবার ঐক্য আজ বড্ড বেশি প্রয়োজন।
লেখক : ফ্যাকাল্টি মেম্বার, অর্থনীতি বিভাগ, এশিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন