গুলশান থেকে রক্তাক্ত নিস
রক্তাক্ত গুলশান সারারাত জাগিয়ে রেখেছিল বাংলাদেশকে। আজ ফরাসিদের চোখের ঘুম কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ফ্রান্সের নিস শহরের রক্ত সারাবিশ্বকে মর্মাহত করেছে। কবি সুকান্ত পৃথিবীকে সব শিশুর বাসযোগ্য করতে চেয়েছিলেন, আজ বিশ্বের কোথাও নিরাপত্তা নেই। ফ্রান্সে জরুরি অবস্থা জারি ছিল ২৬ জুলাই পর্যন্ত। নিসে ট্রাক বোমা হামলায় ৮৪ জনের মৃত্যুর পর তা আরও তিনমাস বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রপতি।
একজন সংসদ সদস্য সিএনএন এ বললেন, তারা আগে থেকেই এমন আশঙ্কা করছিলেন। হায় তারপরও এতগুলো মানুষের প্রাণ রক্ষা করা গেল না। মাত্র কদিন আগেই বাংলাদেশ গুলশান ও শোলাকিয়ার রক্ত দেখেছে। এখনও ট্রমাটাইজ অনেকেই। প্রাথমিক শোক কাটানো গেছে। কিন্ত ফ্রান্সের নিস শহরের রক্তাক্ততা আবারও ভয়ের রাজ্যে নিয়ে যাচ্ছে আমাদের। একই গ্লোবাল ভিলেজের গালভরা বুলি নতুন করে ভাবাচ্ছে সবাইকে।
ফ্রান্স নিজে সিরিয়া ও ইরাকে পরিচালিত সামরিক অভিযানের সঙ্গে যুক্ত। বাংলাদেশ তা নয়। তারপরও রক্তের স্রোত বয়ে যাচ্ছে বিশ্বজুড়ে। দেশবিদেশ নিয়ে এমন সব ভয়াবহতা আমাদের হতবিহ্বল করে দিচ্ছে প্রতিনিয়ত। কিভাবে পরিত্রাণ মিলবে, কারোই জানা নেই। ১ জুলাই গুলশান হামলার পর মাত্র ৬ দিনের ব্যবধানে ঈদগাহ ময়দানে আবারও হামলা দেশকে মূহ্যমান করে দিতে উদ্যত হলেও ঈদের আনন্দ কিছুটা হলেও চরম অবস্থা থেকে আমাদের রেহাই দিয়েছিল। কিন্ত এই আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ যে আমাদেরকেও ছোবল দিবে তা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। কিন্ত কিভাবে তা আমরা মোকাবিলা করব সেটাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ।
আমরা ডিলেমায় আছি হোমগ্রোন জঙ্গিদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর যোগাযোগ আছে কি না তা নিয়ে। বিতর্ক হতেই পারে। কিন্ত গুলশান বা শোলাকিয়ার পরিকল্পিত হামলা যা কিনা অনেকজনকে একত্রে হত্যা এবং হলি আর্টিজানে বিদেশি নাগরিক হত্যার বিশেষ উপাদান ষড়যন্ত্রের গভীর শিকড়ের কথাই ইংগিত দেয়। তাই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ববহনকারীর অধিক গুরুত্বপূর্ণ কথাও আমাদের ভালো লাগে না। আমরা শুধু দেশের সবুজ জমিনে লাল রক্ত দেখতে চাই না মোটেই।
লেখক : সম্পাদক, ডিবিসি নিউজ
সম্পাদনা : জব্বার হোসেন