শিক্ষক শ্যামল কান্তির বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ
নুরুল আজিজ চৌধুরী, নারায়ণগঞ্জ : ইসলাম ধর্মের কটূক্তির অভিযোগে লাঞ্ছিত শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে স্কুলের এক শিক্ষিকার কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। শনিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাইদুজ্জামান শরীফের আদালত এ আদেশ দেন।
নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের এসআই সাখাওয়াত হোসেন জানান, ঘুষ নেওয়ার অভিযোগটি তদন্ত করে দেখার জন্য বন্দর থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী এসএম সিদ্দিকুর রহমান জানান, মামলাটি আবেদন করেছেন বন্দর উপজেলার কল্যান্দি এলাকায় পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক মোর্শেদা বেগম। তিনি মামালার এজাহারে উল্লেখ করেন, তাকে এমপিওভুক্ত করে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্ত দুই দফায় ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে এমপিওভুক্ত করতে তিনি কোনোরূপ সহায়তা করেননি।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১৪ জুলাই শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, শিক্ষার্থী রিফাতকে মারধর ও ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে পৃথক তিনটি মামলার আবেদন করা হয়। যার মধ্যে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও শিক্ষার্থী রিফাতকে মারধরের মামলার আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন আদালত।
জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে গত ৮ মে ও ১৩ মে ছাত্র রিফাত হাসানকে মারধরের অভিযোগে মামলাটির আবেদন করেন বাদী রিফাত হাসানের মা রিনা বেগম। অপর মামলায় বন্দর কল্যান্দী এলাকার সামছুল হক সামছু বাদী হয়ে প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্মকে নিয়ে কটূক্তি ও ধর্মীয় অনুভূতিতে অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে এসআই সাখাওয়াত হোসেন জানান, যেহেতু উচ্চ আদালতের নির্দেশে প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তের বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে সেহেতু আদালত ২০৩ ধারা অনুযায়ী রিনা বেগম ও সামছুল হক সামছুর মামলার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৩ মে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার পিয়ার সাত্তার লতিফ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি ভক্তকে ইসলাম ধর্মের কটূক্তির অভিযোগ এনে স্কুল কমিটির লোকজন ও স্থানীয় জনগণ প্রথম মারধর করে। পরে স্থানীয় জাতীয় পার্টির নারায়ণগঞ্জ-৫ (শহর ও বন্দর) আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান কানধরে উঠবস করান। তবে এ বিষয়ে লজ্জিত ও দুঃখ প্রকাশ করে শিক্ষকের প্রাণ বাঁচাতে এ কাজ করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন সেলিম ওসমান। সম্পাদনা : প্রিয়াংকা