হোসাইনী দালানে তাজিয়া মিছিলে বোমা ১০ জঙ্গির বিরুদ্ধে চার্জশিট সম্পন্ন
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায়
আজাদ হোসেন সুমন : হোসাইনী দালানে বোমা হামলার ঘটনায় ১০ জঙ্গির সংশ্লিষ্ট পেয়েছে মামলার তদন্তকারী সংস্থা ডিবি। ইতিমধ্যে জেএমবির এই ১০ সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। কিন্তু মামলাটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় আটকে আছে। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়েরকৃত এ মামলাটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে অনুমোদন বাধ্যতামূলক হওয়ায় এ নিয়ে বিপাকে আছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
জানাগেছে, অভিযুক্ত ১০ জনের মধে ৪ জন জামিনে আছেন, এরা হচ্ছে- নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার লেংগুড়া মধ্য পাড়ার ওমর ফারুক মানিক (২৮), একই উপজেলার হাফেজ আহসান উল্লাহ মাসুদ (২৯),গাজীপুরের কালিয়াকৈরের বড়ইতলীর শাহজালাল মিয়া (৩৮) ও গাইবন্ধার সাঘাটা উপজেলার চান মিয়া (৩২)।
বাকি আসামিরা হলেন- ঢাকার কামরাঙ্গীরচরের পশ্চিম ইব্রাহিমনগর বালুরমাঠের মো. আরমান ওরফে মনির (২৭), ও কামরাঙ্গীরচরের পূর্ব রসুলপুরের জাহিদ হাসান ওরফে রানা ওরফে মুসায়াব (২২), দিনাজপুরের সদর উপজেলার ঘাসিপাড়ার ডাবগাছ মসজিদ এলাকার আবু সাঈদ রাসেল ওরফে সোলায়মান ওরফে সালমান ওরফে সায়মন (২২), একই জেলার রুবেল ইসলাম ওরফে সজীব ওরফে সুমন (২২), গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার কচুয়া দক্ষিণপাড়ার কবির হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আশিক (২৮) ও বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার কেশরতার মাসুদ রানা মাসুদ ওরফে সুমন (২৪)। এবিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এস আই রাকিবুল আলম বলেন, এই মামলার অভিযোগপত্র এখনও আদালতে জমা পড়েনি। সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলার তদন্ত প্রতিবেদন যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া আদালতে জমা দেওয়া যায় না বলে উল্লেখ করেন তিনি।
ইতিমধ্যে ২ আসামী আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। উল্লেখ্য, গত বছরের ২৩ অক্টোবর গভীর রাতে আশুরা উপলক্ষে শিয়াদের তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় হোসাইনী দালানের ইমামবাড়ায় বোমা হামলায় দুজন নিহত হন এবং শতাধিক আহত হন। পরে ঘটনাস্থল থেকে অবিস্ফোরিত দুটি বোমা (ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস- আইইডি) উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে চকবাজার থানায় মামলা করা হলেও তদন্তের দায়িত্ব পায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ।
মামলার নথিতে বলা হয়েছে, ওই হামলার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত আলবানি ওরফে শাহাদত ওরফে মাহফুজ ওরফে হোজ্জা, আবদুল্লাহ বাকি ওরফে আলাউদ্দিন ওরফে নোমান, সাঈদ ওরফে হিরণ ওরফে কামাল। হামলার আগে ১০ অক্টোবর তারা বৈঠক করেছিলেন। হামলার আগে জাহিদ ও কবির ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণ করেন এবং হামলার সময় তাদের সঙ্গে আরমানও উপস্থিত ছিলেন। আরমান ও রুবেল হামলার বেশ আগে কামরাঙ্গীরচরে বাসা ভাড়া নেন। চান মিয়া, ওমর ফারুক, আহসানউল্লাহ, শাহজালাল ও আবু সাঈদ ভিডিও ধারণসহ বোমা হামলায় উদ্বুদ্ধ করেন ও সহায়তা করেন। শুধু আরমান হামলায় অংশ নিয়ে হোসাইনী দালানে পরপর পাঁচটি বোমা ছুড়েন। ওই হামলায় মাসুদ রানার অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও আগের দিন গাবতলীতে পুলিশের তল্লাশি চৌকিতে এএসআই ইব্রাহীম মোল্লাকে হত্যা করে। কিন্তু ঘটনাস্থলেই গ্রেপ্তার হন। সম্পাদনা : হাসান আরিফ