বিদেশিদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনে সরকার আইন করবে
উম্মুল ওয়ারা সুইটি ও আনিসুর রহমান তপন : বাংলাদেশে অবস্থানকারী বিদেশি কূটনীতিক ও নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে নতুন আইনসহ আরও কিছু পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে সরকার। গত ১ জুলাই গুলশান হামলার পর দূতাবাসগুলোর উদ্বেগের প্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সরকার।
স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গুলশানের ঘটনার পর থেকে গতকাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, ইতালিসহ প্রায় সবকটি দেশের দূতাবাস থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে ‘নিরাপত্তা নিশ্চিত’ করতে চিঠি দেওয়া হয়েছে। গত রোববার এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। কিন্তু তারপরও বিদেশি কূটনীতিকরা নিরাপত্তা বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। গত বুধবার ১৬ দেশের কূটনীতিকরা নিরাপত্তা জোরদার করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়েছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।
সরকারের পক্ষ থেকে দূতাবাসগুলো নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলা হয়েছে, বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তা দিতে সরকার নতুন কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে। এজন্য আইন করতে হলে আইন করবে সরকার। প্রত্যেক নাগরিককে প্রয়োজনে আলাদাভাবে নিরাপত্তা দেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল আমাদের অর্থনীতিকে বলেন, বিদেশিদের নিরাপত্তায় প্রয়োজনে আইন করব। ডিপ্লোম্যাটিক জোনে আমরা এরই মধ্যে নিরাপত্তা জোরদার করেছি। সারা পৃথিবীতেই সন্ত্রাসী হামলা হচ্ছে। এটা বাংলাদেশের একার কোনো সমস্যা নয়। আমরা বিদেশি নাগরিকদের তালিকা করেছি। অবৈধভাবে যারা বাংলাদেশে রয়েছেন- তাদেরও তালিকা করেছি। তাদের কাছ থেকেও আমরা পরামর্শ নিচ্ছি।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ইতালির নাগরিক তাবেল্লা সিজার হত্যার পর থেকেই মার্কিন দূতাবাসসহ বিভিন্ন দূতাবাস থেকে নিরাপত্তা জোরদারের কথা বলা হয়েছে। তখন থেকেই সরকার বাংলাদেশে বসবাসকারী বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়টি আমলে নিয়েছে এবং বিদেশি নাগরিকদের তালিকাও প্রস্তুত করেছি। কিন্তু এরই মধ্যে গুলশান হামলার পর প্রাথমিকভাবে বিদেশিদের নিরাপত্তা বিশেষ করে বারিধারার ডিপ্লোম্যাটিক জোনে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা।
জানা গেছে, হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় সন্ত্রাসী হামলার পর গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশের তিনটি বিভাগ যৌথভাবে কাজ করছে। গুলশান বিভাগ, কূটনৈতিক বিভাগের পুলিশের সঙ্গে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন সমন্বয় করে কাজ করছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কূটনৈতিক নিরাপত্তা বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) জসিম উদ্দিন বলেন, নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি পুলিশের সংখ্যাও (ইনহ্যানস) বাড়ানো হয়েছে। এসব এলাকায় বসবাসরত বিদেশি নাগরিকদের ওয়াচফুল রাখা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে বিদেশিদের চলাফেরায়। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম