সামাজিক মিডিয়ার আহ্বান এরদোগানকে বাঁচিয়েছে
আলী রিয়াজের স্ট্যাটাস থেকে
তুরস্কের (চলমান) সেনা অভ্যুথানের বিরুদ্ধে ইস্তাম্বুুলে সরকারের পক্ষে যে লাখো মানুষ পথে নেমে এসেছে সেটা প্রধানত সম্ভব হয়েছে প্রেসিডেন্ট এরদোগানের দেওয়া এক সাক্ষাতকারের কারণে; সিএনএনর তুর্কি ভাষার টেলিভিশন স্টেশনকে তিনি এই সাক্ষাৎকার দেন যখন প্রায় ধরেই নেওয়া হচ্ছিল যে অভ্যুত্থান সফল হয়েছে। সেখানেই তিনি সাধারণ মানুষকে পথে নামতে ডাক দেন, অনুরোধ করেন বিমানবন্দরে যেতে। তার সমর্থকরা বিমানবন্দরে যাওয়ার কারণেই এরদোগান ইস্তাম্বুলে ফিরতে পেরেছেন। তিনি এই সাক্ষাৎকার দেন আই ফোনের ফেসটাইমের মাধ্যমে। আধুনিক যোগাযোগ প্রযুক্তির কারণে চাইলেই তথ্যের প্রবাহের ওপরে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয় নাÑ এটা আরেকবার প্রমাণিত হলো। কিন্তু এ ঘটনার আরেকদিক হচ্ছে এই যে, একজন কর্তৃত্ববাদী শাসক হিসাবে গত বছরগুলোতে এরদোগান গণমাধ্যমের ওপরে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছেন, সাংবাদিকদের ওপরে চালিয়েছেন নির্যাতন। মে মাসের গোড়াতে প্রকাশিত এক খবরে দেখা যায় দেশের শীর্ষ স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রতি সপ্তাহেই দু-একবার আদালতে হাজির হতে হয়, একাধিক সাংবাদিক হত্যার ঘটনাও ঘটেছে, দেশের অস্থিতিশীল দক্ষিণ-পূর্বে কুর্দী সাংবাদিকদের পেটানোর বা আটকের ঘটনা ঘটছে অহরহ, বিদেশি সাংবাদিকরা প্রতিনিয়ত লাঞ্ছনার শিকার হন অথবা তাদের জোর করে বের করে দেওয়া হয়। বিরোধীদের মালিকানাধীন গণমাধ্যম জোর করে বা কৌশলে সরকারের সমর্থকদের দখলে তুলে দেওয়া হয়েছে। এরদোগানের ভরসা ছিল সরকারি গণমাধ্যমের ওপর যারা কেবল তার গুণগানেই ব্যস্ত। কিন্তু নিয়তির পরিহাস এই যে, তার সবচেয়ে বিপদের দিনে তার সাক্ষাৎকার প্রচার করেছে দেশে চালু থাকা একটি বিদেশি গণমাধ্যম। আর সে কারণে এখন সেনারা ‘সিএনএন টার্ক’ চ্যানেল বন্ধ করে দিয়েছে।
[সংযোজন – সিএনএন টার্ক আবার চালু হয়েছে।