জঙ্গি নেটওয়ার্ক চিহ্ণিত এখন চলছে ভেংগে দেয়ার কাজ
বিশ্বজিৎ দত্ত : একটি মাত্র জনপ্রতিরোধে একজন জঙ্গি ফাহিম গ্রেফতারের পরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে জঙ্গি নেটওয়ার্কের বিষয়টি স্পষ্ট হতে শুরু করে। এখন পুলিশ জঙ্গিদের নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়ার কাজ করছে। গ্রেফতার করা হচ্ছে জঙ্গিদের ও তাদের মূল নির্দেশদাতাদের। আশা করছি, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই জঙ্গিদের কার্যক্রম দমিয়ে দেওয়া যাবে। জঙ্গি দমনে কাজ করছেন এমন কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে গতকাল আলাপ করে এমন তথ্য পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, মাদারীপুরে শিক্ষক রিপন চক্রবর্তীকে কুপিয়ে জখম করার সময় স্থানীয় জনগণের হাতে ধরা পড়ে উত্তরা হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র ফাইজুল্লা ফাহিম। পরে ক্রসফায়ারে তার মৃত্যু হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ফাহিমের কাছে পাওয়া তথ্য ও গোয়েন্দাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ প্রথমে জানতে পারেÑ সামগ্রিক ট্রেনিংপ্রাপ্ত জঙ্গির সংখ্যা খুব বেশি নয়। তাদের পরিচয় জানার পর্যায়েই গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গিরা হামলা চালায়। পুলিশ আগেই বিষয়টি আঁচ করতে পেরেছিল। কিন্তু ঘটনাস্থল নিশ্চিত হতে পারেনি। হলি আর্টিজানে নিহত ৬ জঙ্গি ছিল সামগ্রিক ট্রেনিংপ্রাপ্ত। এই জঙ্গিদের কারও সঙ্গে বা আর্টিজানে উপস্থিত এক ব্যক্তির সঙ্গে আইএসের অনলাইন যোগাযোগ ছিল। ফলে জঙ্গিরা সাইট ইন্টেলিজেন্স ওয়েবসাইটে তাদের ছবি ও খুনের ছবি পাঠাতে পেরেছে।
পরবর্তীতে শোলাকিয়ায় নিহত আবিরকে কিন্তু আইএস স্বীকার করেনি। অথচ আর্টিজানে নিহত জঙ্গি নিব্রাস ও আবির নর্থ-সাউথ ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেছে। তারা ঝিনাইদহে মাদ্রাসাসংলগ্ন মেসে থেকেছে। দুজনের নিখোঁজ হওয়ার সময়ও প্রায় একই।
আইএস আবিরের বিষয়টি প্রকাশ করতে পারেনি। কারণ গুলশান ও শোলাকিয়া হামলার পরই আইএসভাবাপন্ন ব্যক্তিটি আত্মগোপন করে অথবা মারা গেছে। পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সাতক্ষীরা ও দেশের কয়েকটি স্থান থেকে কয়েকজনকে গ্রেফতার করে। তারা আরও কিছু ব্যক্তির নাম বলেছে। অন্যদিকে আর্টিজান থেকে উদ্ধার নর্থ-সাউথের সাবেক শিক্ষক আবুল হাসনাত রেজাউল করিম ও অন্য একজন তাহমিদ হাসিব খান জঙ্গি বিষয়ে কিছু তথ্য দিয়েছে। যার প্রেক্ষিতে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রোভিসি এবং তার সঙ্গে আরও দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জঙ্গিদের নিয়ে কাজ করছেন সিআইডির এমন একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, লক্ষ্য করে থাকবেন, গুলশান ও শোলাকিয়ার হত্যার পর জঙ্গিরা আরও দুটি মন্দিরে হামলার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এটি ছিল একেবারেই কাঁচা। অর্থাৎ জঙ্গিদের ট্রেইন্ড দলটির মধ্যে বেশিরভাগ গ্রেফতার হয়েছে বা মারা গেছে। তিনি বলেন, গ্রেফতার জঙ্গিদের তথ্য অনুযায়ী তারা স্থানীয়ভাবেই বিভিন্ন ব্যক্তির দ্বারা প্রভাবিত। তাদের মধ্যে অনেকে আইএস ভাবাদর্শে উজ্জীবিত।
উল্লেখ্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গতকাল এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, পুলিশ আগেই গুলশান হামলা ও শোলাকিয়া হামলার ঘটনা জানত। সম্পাদনা : হাসিবুল ফারুক চৌধুরী