হত্যামামলায় রানাসহ ৪১ আসামির বিরুদ্ধে চার্জগঠন
মামুন খান : ঢাকার অদূরে সাভারের রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় দায়ের করা হত্যামামলায় ভবন মালিক সোহেল রানা এবং তার মা-বাবাসহ ৪১ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছেন আদালত। এই চার্জ গঠনের মধ্য দিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো। গতকাল সোমবার আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এসএম কুদ্দুস জামান চার্জগঠন করেন। একই সাথে বিচারক আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর মামলাটিতে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেছেন।
চার্জগঠন সম্পর্কে ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খোন্দকার আব্দুল মান্নান বলেন, ৪১ জন আসামির মধ্যে মো. শাহ আলম ওরফে মিঠু, মো. আবুল হাসান ও সৈয়দ শফিকুল ইসলাম জনির বিরুদ্ধে আসামি সোহেল রানাকে পালাতে সহযোগিতার জন্য দ-বিধির ২১২ ধারায় এবং অপর ৩৮ আসামির বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগে চার্জ গঠন করা হয়েছে।
চার্জগঠনের শুনানির সময় বিচারক কুদ্দুস জামান বলেন, এটা আর ১০টা হত্যামামলার মতো নয়। প্রত্যক্ষভাবে কেউ কাউকে হত্যা করেছি। কতগুলো মানুষের বাড়াবাড়ির কারণে সেদিন এক হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়। চার্জগঠনের শুনানির পর্যায়ে আসামিপক্ষের কোনো দলিল-দস্তাবেজ দেখার সুযোগ নেই। চার্জশিটে প্রত্যেক আসামির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। তাই কারও অব্যাহতি পাওয়ার সুযোগও নেই।
চার্জগঠনকৃত আসামিরা হলেনÑ ভবন মালিক মো. সোহেল রানা, প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম, মো. আব্দুল সামাদ, উপ-প্রধান পরিদর্শক মো. জামশেদুর রহমান, ইমারত পরিদর্শক মো. আওলাদ হোসেন, মো. আব্দুল হামিদ, সোহেল রানার বাবা মো. আব্দুল খালেক ওরফে খালেক কুলু, মা মর্জিনা বেগম, সাভার পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড কমিশনার মোহাম্মদ আলী খান, উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান রাসেল, নিউওয়েব বাটন লিমিটেডের চেয়ারম্যান বজলুস সামাদ আদনান, নিউওয়েব স্টাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহমুদুর রহমান তাপস, ইথার টেক্সটাইলের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান ওরফে আনিসুজ্জামান, মো. আমিনুল ইসলাম, সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. সরওয়ার কামাল, আবু বকর সিদ্দিক, মো. মধু, অনিল দাস, মো. শাহ আলম ওরফে মিঠু, মো. আবুল হাসান, সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উত্তম কুমার রায়, মো. ইউসুফ আলী, মো. সহিদুল ইসলাম, মো. আতাউর রহমান, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের সাবেক উপ-প্রধান পরিদর্শক মো. আব্দুস সালাম, বিদ্যুৎ মিয়া, তাসলিম, সাভার পৌরসভার বরখাস্তকৃত মেয়র আলহাজ্ব মো. রেফাত উল্লাহ, মো. আমিনুল ইসলাম, সাবেক সহকারী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, নগর পরিকল্পনাবিদ ফারজানা ইসলাম, উপ-প্রধান পরিদর্শক মো. বেলায়েত হোসেন, ইথার টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. জান্নাতুল ফেরদৌস, মো. শরিফুল ইসলাম ভূইয়া, মনোয়ার হোসেন বিপ্লব, সৈয়দ শফিকুল ইসলাম ওরফে জনি, রেজাউল ইসলাম, নান্টু কন্ট্রাকটর, আব্দুল মজিদ, নয়ন মিয়া ও পরিদর্শক প্রকৌশলী মো. ইউসুফ আলী।
আসামিদের মধ্যে প্রথম ছয়জন কারাগারে, পরের ২৩ জন জামিনে এবং শেষের ১২ জন পলাতক রয়েছেন। চার্জগঠনকালে কারাগারে এবং জামিনে থাকা আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। গত ১৬ জুন একই ঘটনায় দায়ের করা ইমারত নির্মাণ আইনের মামলায় সোহেল রানাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।
গত বছর ১ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার বিজয় কৃষ্ণ কর। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি