এস এম নূর মোহাম্মদ : মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত থাকার দায়ে জামালপুরের তিনজনকে ফাঁসি এবং পাঁচজনকে আমৃত্যু কারাদ-ের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। গতকাল সোমবার বিচারপতি আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই রায় ঘোষণা করেন।
এর আগে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে করে সকাল ৯টার দিকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয় গ্রেফতার থাকা দুই আসামিকে। কিছু সময় হাজতখানায় রেখে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাদের তোলা হয় কাঠগড়ায়। এর পরপরই তিন বিচারক আসন গ্রহণ করেন।
শুরুতে বিচারপতি আনোয়ারুল হকের সূচনা বক্তব্যের পর ২৮৯ পৃষ্ঠা রায়ের সার সংক্ষেপ পড়া শুরু করেন বিচারপতি মো. সোহরাওয়ার্দী। এরপর বিচারপতি শাহিনুর ইসলাম রায়ের আরেকটি অংশ পড়েন। সবশেষে সাজা ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান।
রায়ে বলা হয়, আসামিদের বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা পাঁচ অভিযোগের মধ্যে তিনটি সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। সরকার ফাঁসিতে ঝুলিয়ে অথবা গুলি করে মৃত্যুদ- কার্যকর করতে পারবে বলে আদালত উল্লেখ করেন। এ নিয়ে ২৫ মামলার ৪৪ আসামির মধ্যে মোট ২৬ আসামির সর্বোচ্চ সাজার আদেশ হলো।
মৃত্যুদ- পাওয়া আসামিরা হলেনÑ আশরাফ হোসাইন, আবদুল মান্নান ও আবদুল বারী। আর আমৃত্যু কারাদ- পাওয়া আসামিরা হলেনÑ শরীফ আহম্মেদ ওরফে শরীফ হোসেন, হারুন, আবুল হাশেম, মো. শামসুল হক ওরফে বদর ভাই ও এস এম ইউসুফ আলী। এদের মধ্যে গ্রেফতারকৃত শামসুল ও ইউসুফকে গতকাল রায়ের সময় আদালতে হাজির করা হয়। বাকি ছয় আসামি এখনো পলাতক। তবে রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করতে হলে তাদের আত্মসমর্পণ করে একমাসের মধ্যেই তা করতে হবে।
এদিকে, গতকালের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপক্ষ। রায়ের প্রতিক্রিয়ায় প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ বলেন, আমরা এ রায়ে খুশি। তবে মৃত্যুদ- না হওয়ায় ছয় আসামির ব্যাপারে আপিল করা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, রায় দেখে পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নিবেন। অপরদিকে রায়ে সন্তুষ্ট নন জানিয়ে আপিল করার কথা জানান গ্রেফতার থাকা দুই আসামির আইনজীবী গাজী এম এইচ তামিম।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর তুরিন আফরোজ ও তাপস কান্তি বল। গ্রেফতার দুই আসামির পক্ষে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মিজানুর রহমান ও গাজী এম এইচ তামিম। আর পলাতক আসামিদের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী আব্দুস সোবহান তরফদার। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি