উম্মুল ওয়ারা সুইটি : বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বহিঃসমর্পণ সম্পর্কিত চুক্তি সহজ করার এক সংশোধনী প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। এই সংশোধনীর ফলে এখন বাংলাদেশ ও ভারত যেকোনো অপরাধীর বিরুদ্ধে নিজ দেশে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে তাকে তার দেশে বহিঃসমর্পণ করতে পারবে। এজন্য কোনো তথ্য প্রমাণ উপস্থাপন করতে হবে না।
গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদের নিয়মিত সাপ্তাহিক বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান। সচিব বলেন, ভারত সরকার বিদ্যমান চুক্তিটি সহজ করতে এর ১০/৩ ধারা সংশোধনের প্রস্তাব করে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বর্তমান আইনে একটু জটিলতা রয়েছে। এতে বহিঃসমর্পণের জন্য কোনো অপরাধীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরও প্রমাণ উপস্থাপনের প্রয়োজন ছিল। অনুমোদিত এই সংশোধনীর ফলে অভিযুক্তকে প্রত্যর্পণে আর কোনো প্রমাণের প্রয়োজন হবে না। বর্তমান বহিঃসমর্পণ চুক্তিটি ২০১৩ সালের ২৩ অক্টোবর কার্যকর হয়।
সচিব বলেন, ফৌজদারি মামলায় বিচারাধীন বা দ-প্রাপ্ত আসামি বিনিময়ে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান বহিঃসমর্পণ চুক্তির একটি ধারা সংশোধন করে ওই সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে।
শফিউল আলম বলেন, ২০১৩ সালের ২৩ অক্টোবর থেকে চুক্তিটি কার্যকর রয়েছে। চুক্তির একটি জটিল ধারা ভারত সরকার সহজ করার অনুরোধ করেছিল।
সচিব বলেন, এটি সহজ করার ফলে, যদি আমাদের দেশে কোনো জজ, ম্যাজিস্ট্রেট, ট্রাইব্যুনাল বা এ ধরনের অথরিটি অ্যারেস্ট ওয়ারেন্ট ইস্যু করে থাকে আর সে যদি ভারতের লোক হয় তাহলে আমরা তার জন্য বহিঃসমর্পণের সুপারিশ করতে পারব।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের কেউ ভারতে আছে, কিন্তু বাংলাদেশে তার বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি হয়ে গেছে, ট্রায়াল করার জন্য ভারত সরকার তাকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করবে। অনুরূপভাবে ভারত সরকার যদি ওয়ারেন্ট থাকা কাউকে চায় আমরা তাকে হ্যান্ডওভার করে দেব।
বাংলাদেশে ১৮ বছর কারাবন্দি থাকার পর উত্তর-পূর্ব ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার নেতা অনুপ চেটিয়াকে গতবছর নভেম্বরে ভারত সরকারের কাছে হস্তান্তর করে বাংলাদেশ। এর কয়েক দিনের মাথায় নারায়ণগঞ্জের চাঞ্চল্যকর সাত খুনের প্রধান আসামি নূর হোসেনকে বাংলাদেশের হাতে ফিরিয়ে দেয় ভারত।
আট বছর আগে বাংলাদেশে অনুপ চেটিয়ার সাজার মেয়াদ শেষ হলেও তাকে হস্তান্তরের বিষয়টি বহুদিন আটকে ছিল।
শেষ পর্যন্ত ২০১৩ সালে দুই দেশের মধ্যে বহিঃসমর্পণ চুক্তি হলেও প্রমাণ দাখিলের বাধ্যবাধকতার কারণে ওই আইনে তাকে ফেরানো যায়নি। একই জটিলতা ছিল নূর হোসেনের ক্ষেত্রেও। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম