এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি
দীপক চৌধুরী : বাংলাদেশের প্রথম এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে সরকার। গতকাল সোমবার রাজধানীর পেট্রোসেন্টারে এক্সিলারেট এনার্জির সঙ্গে দুটি চুক্তি করে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং পেট্রোবাংলা।
চুক্তি দুটি হলোÑ কক্সবাজারের মহেশখালীতে ভাসমান এলএনজি টার্মিনাল বাস্তবায়ন চুক্তি এবং টার্মিনাল ব্যবহার চুক্তি। টার্মিনালের মাধ্যমে আগামী ১৮ মাসের মধ্যে এলএনজি আমদানি করে ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা মেটানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
প্রায় ১ লাখ ৩৮ হাজার ঘনমিটার এলএনজি ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন টার্মিনালটি থেকে দৈনিক ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাবে। পেট্রোবাংলার হিসাবে বাংলাদেশে দৈনিক প্রায় ২৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উৎপাদিত হচ্ছে; যদিও চাহিদা এর থেকে অনেক বেশি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর জ্বালানিসংকট মোকাবিলায় কক্সবাজারের মহেশখালীতে লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাস (এলএনজি) টার্মিনাল তৈরির উদ্যোগ নেয়। কিন্তু নানা জটিলতায় ওই মেয়াদের পাঁচ বছরেও তার বাস্তবায়ন শুরু করা যায়নি। কারিগরিসহ নানাবিধ কারণে দেলি হওয়ায় প্রায় ৭ বছর পর চুক্তি হলো।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বলেন, শিল্প ও বিদ্যুৎ উন্নয়নে আমাদের যে লক্ষ্য তাতে আরও ৩৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট নতুন গ্যাস লাগবে। এ লক্ষ্য পূরণ করতে গ্যাস অনুসন্ধান চলছে, পাশাপাশি আমদানি করারও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ভাসমান এ টার্মিনাল ছাড়াও ভূমিতে আরও চারটি এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। এছাড়াও একাধিক ভাসমান টার্মিনাল নির্মাণের প্রস্তাব তাদের কাছে রয়েছে।
চুক্তিতে সই করেন জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব জনেন্দ্র নাথ সরকার, পেট্রোবাংলার সচিব সৈয়দ আশফাকুজ্জামান এবং এক্সিলারেট এনার্জির প্রধান উন্নয়ন কর্মকর্তা ড্যানিয়েল বুসটাস।
এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণে এক্সিলারেট এনার্জি প্রায় ৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে; যা বাংলাদেশে শেভরনের পর যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কোম্পানির সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ হতে যাচ্ছে।
এক্সিলারেট এনার্জি টার্মিনাল নির্মাণ করার পর বাংলাদেশ তা ১৫ বছর ব্যবহারের জন্য চুক্তি করেছে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এলএনজি আমদানি করতে বছরে সরকারের ব্যয় হবে প্রায় দেড়শ কোটি ডলার। টার্মিনাল ভাড়া বাবদ বছরে দিতে হবে ৯ কোটি ডলার এবং কর ও ভ্যাট বাবদ দিতে হবে ২ হাজার ২৫৪ কোটি টাকা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট।