পাসপোর্ট পেতে ভোগান্তি পরিচালক গ্রেফতার
আজাদ হোসেন সুমন : পাসপোর্ট যেন সোনার হরিণ। এটি প্রক্রিয়া শুরু করা থেকে হাতে পাওয়া পর্যন্ত গ্রহিতাদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। পাসপোর্ট তৈরিতে ব্যাংকে ফি জমা দেওয়া, কাগজপত্র সত্যায়ন, জন্মসনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহসহ আরও অনেক বিষয় জড়িত। পুলিশ ভেরিফিকেশন পেতে সাধারণ মানুষকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হয় বলে ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে। এদিকে, ভুয়া অনাপত্তিপত্র দেওয়ার মামলায় পাসপোর্ট অধিদফতরের পরিচালক মুন্সি মুয়ীদ ইকরামকে গ্রেফতার করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন- দুদক।
আবেদন করার পর সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্য পাসপোর্ট অধিদফতর থেকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম-ঠিকানা যাচাই করার জন্য পুলিশের বিশেষ শাখায় পাঠানো হয়। পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর পর্যায়ের কর্মকর্তাকে এ তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। নাম-ঠিকানাসব তথ্য ঠিক থাকার পরও তারা রিপোর্ট দিতে টালবাহানা করেন।
সম্প্রতি একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে টিআইবি। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, সেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে মানুষ সবচেয়ে বেশি দুর্নীতির শিকার হয়েছে পাসপোর্ট তৈরি করতে গিয়ে। পাসপোর্ট তৈরির প্রক্রিয়াগুলোতে নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি রয়েছে। এ সেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে সেবা গ্রহণকারীদের ৭৬ শতাংশই বলেছেন, তাদের ঘুষ দিতে হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য অনিয়মের মধ্যে সময়ক্ষেপণ, প্রতারণা, স্বজনপ্রীতি ও আত্মসাতের ঘটনার কথাও উল্লেখ করেছেন সেবা গ্রহীতারা।
এ ব্যাপারে পুলিশের বিশেষ শাখার একজন পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, বাইরে থেকেই এসব কথা শুনি। এসব বিষয়ে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ নেই। তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে সেটা তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যায়। বিষয়টি কাগুজে বাঘের মতো মুখে শুনি কিন্তু একটা লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায় না।
পাসপোর্ট অধিদফতরের পরিচালক গ্রেফতার : দুদক সূত্র জানায়, ২২টি পাসপোর্টের নথিতে প্রতিস্বাক্ষর করেছেন বহির্গমন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের ঢাকার পরিচালক মুন্সী মুয়ীদ ইকরাম, উপপরিচালক মো. ফজলুল হক, সহকারী পরিচালক এসএম শাহজামান, সহকারী পরিচালক নাসরীন পারভীন ও সহকারী পরিচালক উম্মে কুলসুম। তদন্তে সেগুলোর জালিয়াতি ধরা পড়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে তুরস্ক সরকারের দেওয়া এক চিঠির সূত্র ধরে অফিসিয়াল পাসপোর্ট জালিয়াতির বিষয়টি জানাজানি হয়। পাসপোর্ট অধিদফতর সূত্র জানায়, গত এক বছরে অফিসিয়াল পাসপোর্ট নিয়ে বিভিন্ন দেশে প্রায় ২৪ হাজার ব্যক্তি ভ্রমণ করেছেন। সাড়ে সাত হাজার ব্যক্তি এখনো দেশে ফেরেননি। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি