
সাক্ষাতকারে আহমেদ আযম জামায়াত ছাড়াই সরকারের সঙ্গে বসার ইচ্ছা বিএনপির
শাহানুজ্জামান টিটু : উগ্র ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় বিএনপির পক্ষ থেকে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। কিন্তু সরকার প্রধান হিসেবে প্রধানমন্ত্রী বাস্তবতা উপলব্ধি না করেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারপরও এই দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য খালেদা জিয়ার নেতৃতে জাতীয় ঐক্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে বিএনপি। পাশাপাশি সরকার বিএনপিকে আলোচনায় ডাকলে জামায়াত ছাড়াই বসতে চায় দলটি। কিন্তু সরকারকে সেই উদ্যোগ নিতে হবে। অপর দিকে যারা জাতীয় ঐক্যের পক্ষে সাড়া দেবেন তাদের নিয়ে জাতীয় ঐক্য হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান। গতকাল রাজধানীর পল্টনে তার ব্যক্তিগত কার্যালয়ে আমাদের অর্থনীতিকে দেওয়া সাক্ষাতকারে তিনি এসব কথা বলেন।
জামায়াতকে নিয়ে সরকার কোনো সমঝোতা কখনই চাচ্ছে না। এর আগেও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে জামায়াতকে বাদ দিলে বিএনপির সঙ্গে আলোচনা হতে পারে। তাহলে দেশ ও জাতির স্বার্থে কেন জামায়াত প্রশ্নে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না বিএনপি এই প্রশ্নের জবাবে আহমেদ আযম বলেন, সরকার একবারের জন্যেও বলেনি বিএনপিকে আমরা অফার দিলাম জামায়াতকে ছাড়াই আপনারা আলোচনায় আসেন। কই তারা তো তা বলেনি। আপনারা বিএনপির সঙ্গে ঐক্য করবেন। ডাকেন না বিএনপিকে। দেখেন জামায়াতকে ছাড়া বিএনপি যায় কিনা। এখন বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের এলায়েন্স থাকলে তারা বিএনপিকে ডাকবে না। কিন্তু তারাতো স্বৈরাচারের সঙ্গে এলায়েন্স করেছে। এগুলো আর কিছু না, এগুলো ঐক্যে না আসার একটা ফন্দিফিকির।
তিনি বলেন, আমরা জাতীয় ঐক্যের ব্যাপারে সরকারকে কোনো শর্ত দেইনি। জামায়াত যেমন একদিক থেকে স্বীকৃত অন্যদিকে সরকারের সঙ্গে তো স্বীকৃত স্বৈরাচারও রয়েছে। আমরা কিন্তু একবারের জন্যও বলিনি আওয়ামী লীগের সঙ্গে স্বীকৃত স্বৈরাচার আছে আমরা যাব না। আওয়ামী লীগ ঐক্য চায় না। কারণ ঐক্য হলেই উগ্র ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা করার পরই আসবে আমাদের এই শান্তিপূর্ণ দেশে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পালা।
আহমেদ আযম বলেন, সেজন্য এখানে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকার দরকার, তাই নির্বাচন দিন। যেহেতু আপনারা নির্বাচিত সরকার নন। ওই ভয়েই মূলত আওয়ামী লীগ আমাদের সঙ্গে ঐক্যে আসছে না। জামায়াত প্রসঙ্গটা আসলে মুখ্য কোনো বিষয় না।
জাতীয় ঐক্যের যে উদ্যোগ নিয়ে বিএনপি দেশের বিভিন্ন শ্রেণি- পেশার মানুষ, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে হঠাৎ করে সেই প্রক্রিয়াটি থেমে গেছে জানতে চাইলে আহমেদ আযম বলেন, না এটা থেমে যায়নি। প্রতিটি ইভেন্ট প্রস্তুত করতে একটা সময়ের প্রয়োজন হয়। কাজেই জাতীয় ঐক্যের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোসহ শ্রেণি-পেশার নেতাদের সাথে খালেদা জিয়ার মতবিনিময় এটা চলতে থাকবে। আমরা সরকারের প্রতি আবারও আহ্বান জানিয়ে বলছি, সরকার হীনমন্যতায় না ভুগে, ক্ষুদ্র ও একমুখি চিন্তা না করে, ক্ষমতা ছাড়ার আতঙ্কে না ভুগে বর্তমান সমস্যা মোকাবিলা করার জন্যে অবশ্যই জাতীয় ঐক্যের ডাকে সাড়া দেবেন এবং উদ্যোগ গ্রহণ করবেন।
জাতীয় কনভেনশন কবে নাগাদ সম্ভব হবে বলে মনে করেন জবাবে আহমেদ আযম বলেন, সবার সঙ্গে আলোচনার শেষে তাড়াতাড়িই জাতীয় কনভেনশনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। এই কনভেনশনের মধ্যে দিয়ে গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ হবে। তাই সে পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম
