মবিনুর রহমান : নিখোঁজ তরুণেরা ফিরতে পারে আত্মঘাতী হয়ে এমনটাই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন আইনশৃঙ্খখলা বাহিনীর বেশ কয়েকজন পদস্থ কর্মকর্তা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক পদস্থ কর্মমর্তা এই প্রতিবেদককে জানান, গুলশানে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁ ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলায় অংশ নেয়া প্রত্যেকেই দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন এসব তরুণেরা ছদ্মবেশে আত্মগোপন করে বড় কোনো আত্মঘাতী হামলার জন্যই তৈরি হচ্ছিল।
গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলা চালিয়ে নিহত হওয়া নিবরাস ইসলামের সঙ্গে ৩ ফেব্রুয়ারি ঘর ছাড়েন ধানমন্ডির বাসিন্দা তাওসিফ। কিন্তু তাওসিফ এখনও নিখোঁজ। একই দিনে ঘরছাড়া শেহজাদ ওরফে অর্কেরও কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
নিখোঁজ থাকা এক তরুণের পরিবার বলেন, ‘যারা হামলা করে মারা গেছে, তারা তো গেছেই। আমরা এখন সারাক্ষণ চিন্তায় আছি, আমাদের ছেলেরা কোথায় কী ঘটায় তা নিয়ে।’
গত সোমবার বগুরায় এসব বিপথগামী নিখোঁজ তরুণেরা ফিরে এলে ১৫ লাখ টাকা পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণাও করেছেন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ।
এ প্রসঙ্গে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান জানান, র্যাবের ১৪টি ব্যাটালিয়নকে নিখোঁজ ব্যক্তিদের সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো বাহিনীর কাছেই পূর্ণাঙ্গ তথ্য নেই।
সম্প্রতি র্যাব নিখোঁজ তরুণদের নিয়ে ২৬২ জনের একটি তালিকাও প্রকাশ করেছেন। পুলিশ বলছে, থানায় জিডির বাইরে আরও অনেকে নিখোঁজ থাকতে পারে। অনেক পরিবারই জিডি করেনি। ডিএমপির মিডিয়া ও জনসংযোগ বিভাগের উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান বলেন, প্রেমঘটিত, ব্যবসায়িক, পারিবারিক সংকটসহ নানা কারণে মানুষ নিখোঁজ হয়। এদের মধ্যে কতজন জঙ্গিবাদে জড়িয়ে নিখোঁজ, সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাইনি। তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই-বাছাই চলছে।
নিখোঁজ তরুণদের নিয়ে দেশবাসী ও আইনশৃঙ্গখলা বাহিনী আতংকের মধ্যে আছে উল্লেখ করে সিআইডির ডিআইজি কামাল উদ্দিন বলেন, যদি কেউ আত্মঘাতী হওয়ার চিন্তা করে তবে সে নিজে মরবে অন্যকেও মারবে। তাহলে তাকে ফেরানো খুবই কঠিন। আত্মঘাতী হয়ে সে নিজেও শেষ হল অন্যকেও শেষ করলো এতে কারও লাভ হল। নারী ও শিশুসহ নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করে বেহেশত আশা করা ঠিক না। তিনি আরও বলেন, এসব তরুণ ব্রেনওয়াশের শিকার। প্রতিটি পরিবারের উচিত সন্তানদের সময় দেওয়া, খোঁজ খবর নেয়া, তাদের চলাফেরায় নজর দেওয়া। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি