মোবারক হোসেন
গাছগাছালি মানুষের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। শুধু মানুষই নয়, গাছপালা ছাড়া কোনো প্রাণীই জীবন ধারণ করতে পারবে না। বিশ্বব্যাপী তাপমাত্রা বেড়ে পরিবেশের ভারসাম্য হারিয়ে যাওয়ার পেছনে প্রধানত দায়ী বৃক্ষহীনতা। গাছপালার স্বল্পতার কারণে ভূপৃষ্ঠে কার্বন-ডাই অক্সাইডের পরিমাণ ভয়াবহভাবে বেড়ে যাচ্ছে। গাছগাছালির উপকারের কোনো শেষ নেই। একটি গাছ বছরে প্রায় ১৩ কেজি কার্বন-ডাই অক্সাইড গ্রহণ করে। মানুষের জীবন-সংশ্লিষ্ট প্রকৃতিগত ধর্ম ইসলামও বৃক্ষরোপণ এবং পরিচর্যার প্রতি জোরালো তাগিদ করেছে।
একটি হাদিসে এসেছে জাবের রা. থেকে বর্ণিত: একবার রাসূলুল্লাহ সা. আনসারি নারী উম্মে মুবাশ্শারা খেজুরের বাগানে প্রবেশ করে তাকে বললেন এই সব খেজুর গাছ কে লাগিয়েছে? কোন মুসলিম ব্যক্তি না কাফের? আনসারি নারী উম্মে মুবাশ্শার বললেন মুসলিম ব্যক্তি। এর পরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন কোন মসলমান যদি বৃক্ষ রোপণ করে অথবা ফসলের চাষ করে আর সেখান থেকে মানুষ অথবা প্রাণী কোন ফল ভক্ষণ করে তাহলে বৃক্ষ রোপণকারীর জন্য তা সাদাকা হয়ে যাবে। -মুসলিম অন্য আরো একটি হাদিসে এসেছে, হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত রাসূল সা. বলেছেন যখনই কোন মুসলিম গাছ লাগায় বা শস্য বুনে এবং এ থেকে মানুষ, পশু-পাখি তাদের আহার্য গ্রহণ করে তখন তার পক্ষে একটি সদকা হিসেবে পরিগণিত হয়। – মুসলিম
শুধু গাছ লাগিয়েই দায়িত্ব শেষ নয়; বরং এর যথাযথ পরিচর্যার মাধ্যমে পুষ্প-পল্লবে বিকশিত হওয়ার সব ব্যবস্থা করতে হবে। আপনার যতেœ যদি একটি বৃক্ষ ফুলে-ফলে সুশোভিত হয়, পথিক এর ছায়ায় বসে, পশু-পাখি বিশ্রামের সুযোগ পায়, ফুল-ফল খেয়ে উপকৃত হয় এরা সবাই আপনার জন্য দোয়া করবে। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ইসলাম কাউকে গাছ কেটে ফেলার অনুমতি দেয় না। এক কথায় গাছের ক্ষতি হতে পারে, এমন কোনো কর্মকা-ই ইসলাম সমর্থন করে না। গাছপালা আল্লাহর অন্যতম সেরা দান। বৃক্ষরোপণ ও তা পরিচর্যা করা মুসলমানদের ধর্মীয় দায়িত্ব। এ জন্য সবার উচিত ব্যাপক বনায়নের মাধ্যমে সবুজাভ প্রকৃতিকে মানুষের বাসযোগ্য করে গড়ে তোলা