র্যাবের নিখোঁজ তালিকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৪ জন
সাহাবুদ্দিন সনু, চাঁপাইনবাবগঞ্জ : সারাদেশে র্যাবের নিখোঁজ তালিকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৪ জন রয়েছে। একজন ফিরে আসলেও বাকি ৩ জনের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। তবে পুলিশ তাদের বর্তমান অবস্থান ও রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা জানার জন্য খোঁজ-খবর নেয়া শুরু করেছেন।
নিখোঁজ বাদশা আলী শিবগঞ্জ উপজেলার মনাকষা ইউনিয়নের রানীনগর গ্রামের মো. মতিউর রহমানের ছেলে। তার পিতা জানান, তার ছেলে গত ২২ এপ্রিল বাড়ি থেকে রাগ করে চলে যায়। এ ব্যাপারে গত ২৭ এপ্রিল শিবগঞ্জ থানায় একটি জিডি করা হয়। সে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতো।
নিখোঁজ সুমন (২৮) একই উপজেলার রানিহাটি ইউনিয়নের কমলাকান্তপুর কড়াইপাড়া গ্রামের মো. রমজান আলীর ছেলে। তার পিতা জানায়, সুমন গত ২০১১ সালে বাড়ি থেকে রাগ করে বের হয়ে যায়। এ ঘটনায় তার পরিবার থানায় জিডি করেনি। সে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে রাজমিস্ত্রীর কাজ করতো। তবে লোকমুখে শোনা যায় সে ঢাকার আমিনবাজারে আছে। জিডি না করায় পুলিশ তার পরিবারকে থানায় যোগাযোগ করার জন্য বলেছে।
গত ১ জুলাই রাজধানীর গুলশান হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে হামলার পর নিখোঁজ বিভিন্ন গণমাধ্যমে যে ১০ জনের ছবি প্রকাশ হয়েছে তার মধ্যে শিবগঞ্জ উপজেলার চককীর্তি ইউনিয়নের চক নাধড়া গ্রামের মো. রফিকুল্লাহ আনসারীর ছেলে নজিবুল্লাহ আনসারী। নজিবুল্লাহ রাজশাহী ক্যাডেট কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ২০০৮ সালে একটি কোম্পানীর সহযোগিতায় মালেয়শিয়ার মেরিণ ইঞ্জিনিয়ারিং কোর্সে ভর্তি হয়ে ৩ বছর পর প্রশিক্ষণের জন্য আমেরিকা যায় এবং এক বছর পর আবারো ওই কোম্পানীর সহযোগিতায় মেরিণ ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে চাকরিতে যোগদান করে ২০১২ সালে। তবে লেখাপড়া ও চাকরিতে সহায়তাকারী ওই কোম্পানীর নাম তিনি বলতে পারেননি। তিনি জানান, চাকরিকালে সে বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছে। কিন্তু গত দেড় বছর ধরে নিখোঁজ রয়েছে। তবে গুলশানে জঙ্গি হামলার পর গত ১০ জুলাই তার পিতা চট্টগ্রামের ইপিজেড থানায় একটি জিডি করেন। তবে, একাধিক ব্যক্তি জানান, তাদের পূর্ব পুরুষরা মুসলিম লীগ সমর্থক ছিল এবং জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ রমজান আলী জানান, নিখোঁজ সুমনের ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেয়া শুরু হয়েছে। অপর নিখোঁজ বাদশা আলীর বিষয়ে থানায় একটি জিডি হয়েছে অনেক আগে। বাদশা আলীর বিষয়ে পুলিশ সর্বশেষ তথ্য জানার জন্য ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছেন।
এ ব্যাপারে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ রমজান আলীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ওই পরিবার সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে এবং নিখোঁজ ব্যক্তি বা তার নিকট কোনো আতœীয়-স্বজনের নামে কোনো মামলা নেই। ওসি আরও বলেন, নজিবুল্লাহ আনসারী পরিবার সম্পর্কে খোঁজ-খবর নেয়া শুরু হয়েছে এবং সে দেশ ত্যাগ করেছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
অপরদিকে, র্যাবের নিখোঁজ তালিকায় মোস্তফা কামাল (২৬) নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের চরনিজামপুর গ্রামের সাইদুর রহমানের ছেলে। তার পিতা জানায়, গত ৬ জুলাই সোনাই চ-িহাটে গরু কিনতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। গত ১৩ জুলাই স্থানীয়দের সহায়তায় সে টেকনাফ থেকে বাড়ি ফিরে আসে। তবে সে নিজামপুর দাখিল মাদ্রাসা দাখিল পাস করে এবং নিখোঁজের আগে সে ঢাকায় গার্মেন্টসে কাজ করত। এব্যাপারে নাচোল থানার অফিসার ইনচার্জ ফাসির উদ্দীন জানান, ‘মোস্তফার গতিবিধি এবং পূর্বের তথ্যাদি পর্যালোচনা শেষে তাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। সম্পাদনা : প্রিয়াংকা