সুলতানা কামাল মুক্তিযুদ্ধকে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিকভাবে বিক্রি করা হচ্ছে
রিকু আমির : এখন মুক্তিযুদ্ধকে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিকভাবে বিক্রি করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন মানবাধিকার কর্মী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা অ্যাড. সুলতানা কামাল। গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্মের জন্য অধিগ্রহণকৃত জমি মূল উত্তরাধিকারদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে এ সভার আয়োজন করে সাহেবগঞ্জ-বাগদা ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি ও জাতীয় আদিবাসী পরিষদ।
তিনি বলেন, আমাদের গর্ব মুক্তিযুদ্ধকে বেচার অধিকার কাউকে দেইনি। যেটা চলছে সেটা চলতে দেওয়া হবে না। আশা করি, অনেকেই আমাদের সাথে দৃঢ়ভাবে বলবেন, এভাবে চলতে দেওয়া যায় না।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশ আমাদের, এই দেশকে বাঁচাতে হলে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। সবার মধ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করতে পারলে এ দেশে কোনো জঙ্গি আক্রমণ করতে পারবে না।
ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে সুলতানা কামাল বলেন, আজকে যারাই রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাচ্ছে, তারাই নিজেদের একরকমভাবে আর সবাইকে আলাদা মনে করে। ফলে সাধারণ মানুষকে রাষ্ট্র থেকে বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। এতে মূলত রাষ্ট্রকেই খ-িত করা হচ্ছে, যা আইনত অন্যায়। কেননা, এই রাষ্ট্র সবার। তাই আমাদের নিজ নিজ দায়িত্ব থেকে কাজে নেমে যেতে হবে।
সভায় ঐক্যন্যাপ সভাপতি পঙ্কজ ভট্টাচার্য্য বলেন, আমাদের আদিবাসী সংগ্রামকে দুইভাবে দেখা যেতে পারে। যদি মানবাধিকার সংগ্রাম হিসাবে দেখেন তাহলে একটি জায়গার মধ্যে থাকতে হবে। আর যদি আমরা শ্রেণিভেদের দিক দিয়ে দেখি তাহলে সফলতা আসবে। নিজেদের জয়ে সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।
কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, প্রশাসন তথা সরকার যদি সঠিক ভূমিকা রাখত তাহলে এই বিষয় নিয়ে আন্দোলনে যেতে হত না। চুক্তি হয়ে তা আবার ভাঙা হচ্ছে। আসলে রাষ্ট্র ফোর টোয়েন্টি হয়ে গেছে। আমাদের রাষ্ট্র চুক্তি ও তা ভঙ্গ দুই-ই করতে দক্ষ। রামপাল, সুন্দরবন বিষয়ে কী হচ্ছে তা তো সবার জানা। ন্যায়সঙ্গত দাবি হওয়া সত্ত্বেও নির্যাতন ও গ্রেফতার করা হচ্ছে।
সভায় অন্যদের মধ্যে মানবাধিকারকর্মী খুশি কবির, সাবেক তথ্য কমিশনার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাদেকা হালিম, রুবায়েত ফেরদৌস ও লেখক পাভেল পার্থ বক্তব্য প্রদান করেন। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম