
জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে রাজপথে ইসলামী দলগুলো
রফিক আহমেদ : ইসলামে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের কোনো স্থান নেই এই সেøাগানে রাজপথে আন্দোলনে নামছে ইসলামী দলগুলো। তাদের দাবি, ইসলাম শান্তির ধর্ম। গতকাল শুক্রবার ইসলামী দলের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে আলাপকালে তারা এ মন্তব্য করেন।
ইসলামী দলের নেতারা বলেন, ইসলাম ধর্ম মানুষকে আদর্শ-চরিত্র গঠনে এবং মানুষকে কল্যাণের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। এ ধর্ম হানাহানি, নৈরাজ্য-সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ সমর্থন করে না। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সব সময়ই ইসলামী দলগুলো অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এমন দাবি করেছে দলগুলো। এছাড়াও সম্প্রতি গুলশান ও শোলাকিয়ায় হামলার ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদেও সোচ্চার তারা।
আওয়ামী ওলামা লীগের সভাপতি মাওলানা ইলিয়াছ হোসাইন বিন হেলালী ও সাধারণ সম্পাদক মাওলানা দেলোয়ার হোসেন এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, সরকারকে সব ধরনের জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য বন্ধে রাজপথে থেকে সাহসী ভূমিকা পালন করেছি। বিএনপি-জামায়াতের ৯৯ দিনের আগুন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আলেম-ওলামাদের সঙ্গে নিয়ে জাতীয় সমজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেইটে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছি। রাজধানীর গুলশান ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় হামলার পর জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা পালন করে আসছি। আগামীতেও বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে আলেম-ওলামারা জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আরও সাহসী ভূমিকার রাখবেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেন তিনি।
ফরিদউদ্দিন মাসুদ বলেন, গুলশান ও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার পর ইসলামী দলগুলো এই ঘটনার পরপরই নিন্দা জানিয়েছে। জঙ্গি-সন্ত্রাস ও উগ্র চিন্তার বিরুদ্ধে দেওয়া ফতোয়ার মাধ্যমে এই আন্দোলনে নিজের অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, আমরা এটা মাত্র শুরু করেছি। আমি সাংবাদিকদের সামনে শুধু বিষয়টি তুলে ধরেছি। এটা জনগণের কাছে পৌঁছাতে হবে।
বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের মহাসচিব এম এ আউয়াল বলেন, আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের শরিক দল হিসাবে আমরা দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছি। আগামীতেও আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। এছাড়াও তরীকত ফেডারেশন স্বাাধীনতাবিরোধী জামায়াত নিষিদ্ধের দাবিতে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রাম করছে। তিনি বলেন, যুদ্ধাপরাধী ও জঙ্গিবাদের সঙ্গে আমাদের কোনো আপস নেই।
বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের সেক্রেটারি জেনারেল ড. খলিলুর রহমান মাদানি বলেন, আমরা আলেম-ওলামাদের নিয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে লিফলেট-পোস্টার করে আন্দোলনে নেমেছি। জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসীদের কখনও ইসলাম সমর্থন করে না। তিনি বলেন, সন্ত্রাসী-জঙ্গিরা মুসলমানদের শত্রু, তারা মুসলিম নামধারী আবু জাহেলের অনুসারী।
ইসলামী ঐক্যজোটের একাংশের চেয়ারম্যান দাবিদার মিছবাহুর রহমান বলেন, আমরা অনেক আগে থেকেই জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে কাজ করছি। যুদ্ধাপরাধের বিচারের বিষয়ে সব সময় সোচ্চার ছিলাম। জামায়াতে ইসলামসহ ধর্মের নাম ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে আমরা সব সময় কথা বলেছি। আমরা ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে আছি, থাকবো।
ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের (চরমোনাই) মহাসচিব মাওলানা ইউনূস আহমদ বলেন, জাতি, দেশ ও ইসলামের যে কোনো ক্ষতিকর বিষয়ের ব্যাপারে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পারে। আমরা কখনও ইসলাম ধর্মের ক্ষতিকর বরদাস্ত করব না।
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা আবদুল লতিফ নেজামী বলেন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান পরিষ্কার। ইসলাম কখনও জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ সমর্থন করে না, তেমনি আমরাও করি না।
বাংলাদেশ ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা আবদুর রব ইউসুফী বলেন, ইসলামে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের কোনো স্থান নেই। যারা জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদে বিশ্বাসী ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা তাদেরকে ঘৃণা করে এবং তাদের থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করে।
জমিয়তে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি আল্লামা নূর হোসেম কাসেমী গতকাল শুক্রবার বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের উত্তর গেটে বক্তব্যে বলেন, ইসলামের সঙ্গে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসীদর কোনো সম্পর্ক নেই। ইসলামের সঠিক শিক্ষা না থাকায় ভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা মানুষ মারছে। যার ফলে আজ আমরা রাজপথে বিক্ষোভ করছি। সম্পাদনা : পরাগ মাঝি
