রিকু আমির : সন্দেহজনক বিরল রোগ উয়ের উল্ফ সিনড্রোমে আক্রান্ত ১২ বছর বয়সী বিথীর ডান স্তনে অপারেশন হতে যাচ্ছে আগামী শনিবার। গত ২০ জুন বিথীর বাম স্তনে প্রথম অপারেশন হয়েছিল। সেসময় বুকের এ জায়গা থেকে নয় কেজি ৪০০ গ্রাম বাড়তি মাংস কেটে ফেলেছিলেন চিকিৎসকরা। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সার্জারি বিভাগের অধীনে আসন্ন অপারেশনটি বিথীর দ্বিতীয় অপারেশন বলে জানান বিথীর বাবা আবদুর রাজ্জাক।
বিথীকে নিয়ে গত ২৬ এপ্রিল আমাদের অর্থনীতিতে ‘বিথীর বিরল রোগ, ওয়েরউল্ফ নাকি হার্সুটিজম’ শীর্ষক শিরোনামে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল।
গতকাল শনিবার দুপুরে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী বিথীকে পাওয়া গেছে, বিএসএমএমইউর সার্জারি বিভাগের বিছানায়। তার পাশে ছিলেন বাবা আবদুর রাজ্জাক ও মা বিউটি আক্তার। আবদুর রাজ্জাক বলেন, ওর কী এমনে বইয়া থাকনের বয়স? স্কুল নিয়া চিন্তা করে। মাইঝে মইধ্যে আমাদের জিগায়, পরীক্ষা না দিতে পারলে আগামীতে ক্লাস সেভেনে কেমনে উঠবো? এমনে তো ভালই, খাইতাছে, ঘুমাইতাছে। বিথীর মুুখম-ল, হাত ও পায়ে ঘন কালো বর্ণের অস্বাভাবিক বড় লোম। বুকে-পিঠেসহ দেহের অন্যত্রও একই অবস্থা। একইসঙ্গে ১১ বছর বয়স থেকে বিথীর স্তনের আকৃতি অস্বাভাবিক আকারে বাড়তে থাকে। তার সামনের উপরের দাঁতের রঙও বিবর্ণ। দেখতে মাংস পি-ের মতো।
৯৯দিন ধরে বিএসএমএমইউতে বিথীর চিকিৎসা চললেও চিকিৎসকরা এখনও রোগটি সম্পর্কে পরিষ্কার করে বলছেন না, রোগটি কী ওয়েরউল্ফ নাকি হার্সুটিজম। বিথীর চিকিৎসার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ডাক্তাররা সাংবাদিকদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি। জানা গেছে, বাম স্তনে অপারেশন হওয়া ছাড়াও বিথীর মুখম-লে লেজার থেরাপি দিয়ে লোম অপসারণ করা হয়েছিল। বর্তমানে লোম আবার বৃদ্ধি পেয়েছে।
একমাত্র মেয়ে আরোগ্য লাভ করবেন- এমন আশা নিয়ে আজও দিন যাচ্ছে আবদুর রাজ্জাক-বিউটি আক্তার দম্পতির। রাজ্জাক বলেন, আমি ভাড়া করা মোটরসাইকেল দিয়া যাত্রী টানি। ওর চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা দরকার। আমার ব্যর্থতা একটাই, টাকা নাই। ওয়াল্টন গ্রুপ ছাড়াও দেশ-বিদেশের অনেক মানুষ সাংবাদিকগো লেখার মাধ্যমে জাইন্না আমার মেয়ের চিকিৎসায় সাহায্য করছে। সবার সহযোগিতা লইয়াই বিথীর চিকিৎসা এহন পর্যন্ত চালাইতে পারতাছি। সাংবাদিকরা প্রথমে লেখনের পর যেমনে ফোন পাইতাম, সহযোগিতা পাইতাম, এখন সেইটা পাই না। আমার মেয়েরে জানি কেউ না ভুলে। সবার সাহায্য না পাইলে পারুম না মেয়ের চিকিৎসা করাইতে। বিথীকে কেউ সহযোগিতা করতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন ০১৭১০৫২১৪৭৯। এটি বিকাশ নম্বর ও বিথীর বাবার ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর। সম্পাদনা : সৈয়দ নূর-ই-আলম