হামলার আশঙ্কার খবর দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যস্ত রাখার কৌশল
নাশরাত আর্শিয়ানা চৌধুরী : জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের শিকার হতে পারে বাংলাদেশ। হামলা করা হতে পারে যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও বিভিন্ন স্থাপনার উপর। এমনকি হামলার শিকার হতে পারে নিরীহ ব্যক্তিরাও। এ জন্য বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে দিনক্ষণও বলে দেওয়া হচ্ছে। ওই সব হামলা হতে পারে এমন কথা সেনাবাহিনীর বরাতেও দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হামলা হচ্ছে না। গত সপ্তাহে এই ধরনের বেশ কয়েকটি হামলা হতে পারে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে সাধারণ মানুষের মধ্যে এ নিয়ে ব্যাপক আতঙ্ক তৈরি হয়। বিষয়টি ছড়িয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেনাবাহিনী এই খবর পায়। তারা শুরুতেই এই ধরনের কোনো সতর্কবার্তা দেয়নি বলেও জানায়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বিভিন্নভাবে হামলার খবর ছড়ানো হচ্ছে। হামলা হবে এমন কথাও বলা হচ্ছে। কিন্তু এই সব খবরের আমরা এখনো তেমন কোনো প্রমাণ পাইনি। তবে যখন যে খবর আসছে সবগুলোই বিবেচনায় নিয়ে এরপর খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ২০ জুলাই যমুনা ফিউচার পার্কে হামলার কথা বলা হয়েছিল আমরা জানতাম যে সেখানে হামলা হবে না। কিন্তু এরপরও আশঙ্কা থেকেই সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। যাতে কোনো ধরনের ফাঁক না থাকে। এছাড়াও অন্যান্য সব স্থানেও যথেষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, দেশবাসীকে বলব আপনারা আমাদের উপর আস্থা রাখুন আমরা সব ধরনের হামলা প্রতিহত করব। ইতোমধ্যে আমরা জঙ্গিদের অনেক হামলার পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দিয়েছি। এ ব্যাপারে সেনাবাহিনীর একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, এ ধরনের কোনো আশঙ্কার কথা সেনাবাহিনী প্রকাশ করেনি। এটা প্রকাশ করা সেনাবাহিনীর দায়িত্ব নয়। কেউ ইচ্ছে করে সেনাবাহিনীর নাম ব্যবহার করে এই ধরনের বার্তা ছড়িয়েছে। যা ছিল গুজব। এই সবে কান না দেওয়ারও পরামর্শ দেন।
এই ধরনের কাজের সঙ্গে কারা জড়িত তাদের খুঁজে বের করার ব্যাপারে কি করা হচ্ছে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, যারা এ ধরনের খবর ছড়াচ্ছে তাদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। যারা কাজগুলো করছে তাদের চিহ্নিত করা গেলেই গ্রেফতার করা হবে।
এ ব্যাপারে সূত্র আরও জানায়, যারা এসব কাজগুলো করছে তারা বেশিরভাগই করছে বিদেশ থেকে। দেশ থেকে সেনাবাহিনীর নাম ব্যবহার করে হামলার খবর ছড়িয়েছে এখনো এ ধরনের প্রমাণ মেলেনি। তবে যেসব মাধ্যমে এই ধরনের বার্তা প্রকাশ করা হয়েছে ও তা অন্যান্যদের শেয়ার করা হয়েছে তাদের ব্যাপারে খোঁজখবর করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এই ধরনের গুজব ছড়ানোর পেছনে সেনাবাহিনী শব্দটি ব্যবহার করার পেছনে কোনো মহলের বিশেষ কোনো উদ্দেশ্য আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এই ব্যাপারে অনুসন্ধান করে দেখা গেছে এই সব গুজবের ভিত্তি নেই। তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যস্ত রাখা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যস্ত রেখে জঙ্গি ও সন্ত্রাসীরা অন্য কোনো ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করতে পারে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শক্তি পরীক্ষার ও এ ধরনের খবর প্রকাশ করার পর তারা কি কি পদক্ষেপ নেয় সেগুলোও দেখার চেষ্টা করতে পারে। সম্পাদনা : সুমন ইসলাম