জঙ্গিবাদ দমন করে শান্তি আনব : প্রধানমন্ত্রী
দেলওয়ার হোসাইন : জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদ দমনের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে জনজীবনে শান্তি ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গতকাল শনিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনপ্রশাসন প্রদক প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনো ধরনের জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসী কর্মকা- আমরা বাংলার মাটিতে হতে দেব না। মানুষের শান্তি, নিরাপত্তা আমরা নিশ্চিত করব। এটা মাথায় রেখেই আমাদের কাজ করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, অবশ্যই আমরা তা পারব। তা যে পারি, সেটা বিশ্বকে আমরা দেখিয়েছি। গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে কমান্ডো অভিযান চালিয়ে জঙ্গিদের হত্যা করে জিম্মি অনেককে উদ্ধারের কথা বলেন সরকারপ্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি মনে করি, বাংলাদেশ বোধহয় পৃথিবীতে একমাত্র দেশ, ১০ ঘণ্টার মধ্যে সেই জঙ্গি দমন করে অনেক হোস্টেজ, তাদের জীবনকে রক্ষা করতে পেরেছি। এই ধরনের ঝামেলা মোকাবিলায় সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও বলেন শেখ হাসিনা। এই জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদ যে নামে, যে ভাবেই আসুক না কেন, তাদেরকে আমাদের দমন করতেই হবে এবং সেটা আমরা করব। ধর্মের নামে জঙ্গিবাদী তৎপরতার নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ খুন করে বেহেশতে গিয়ে হুর পরি পাবে, এটা ইসলামের শিক্ষা মোটেই না।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা যারা স্ব-স্ব কর্মক্ষেত্রে এবং মাঠ পর্যায়ে যারা আছেন, তারা ধর্মের প্রকৃত যে শিক্ষা, সেই শিক্ষাটা যেন মানুষ পায়, সেদিকে লক্ষ্য রাখবেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সরকার বিভিন্নমুখী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। জনপ্রশাসন পদক সেসব কর্মসূচির কর্মীদের মধ্যে প্রতিযোগিতা বাড়াবে। উৎসাহ-উদ্দীপনা বাড়বে। যারা পুরস্কৃত হলেন, তাদের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ এই পদক। জাতীয় ও মাঠ পর্যায়ে যথাক্রমে ১৩ ও ১৭ জনকে পুরস্কার দেওয়া হলো। আগামীতে আরও দেওয়া হবে।
সেবার মনোভাব নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পদোন্নতি দিয়েছি। ১২৩ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি করেছি। আমরা যে বাজেট বা কর্মসূচি হাতে নেই, তা যেন দ্রুত বাস্তবায়ন হয়, এটিই চাই। এজন্য কর্মীদের আরও এগিয়ে যেতে হবে। শুধু চাকরির স্বার্থে চাকরি নয়, জনগণের জন্য কাজ করা পবিত্র দায়িত্ব, সে হিসেবে কর্মসম্পাদন করতে হবে।
এ সময় তিনি বাংলাদেশ সৃষ্টিতে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকার কথা তুলে ধরে স্বাধীন বাংলাদেশে দক্ষ সিভিল সার্ভিস গড়ে তুলতে জাতির জনকের নেওয়া পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন। শেখ হাসিনা তার সরকারের সময় জনপ্রশাসনের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপের বিষয়ে বলতে গিয়ে সরকারি কর্মীদের বেতন বাড়ানো, পদোন্নতি দেওয়া, উন্নত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা, সরকারি কাজে তথ্য প্রযুক্তি সেবা সম্প্রসারণের কথা বলেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সভাপতিত্বে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এইচ. এম. আশিকুর রহমান, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমত আরা সাদেক, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।